পবিএ বাইবেল O.V.

সারা পৃথিবীতে তখন এক ভাষা প্রচলিত ছিল ও শব্দসংখ্যা ছিল সীমিত। মানব গোষ্ঠী পূর্বদিকে পরিভ্রমণ করতে করতে অবশেষে শিনিয়র দেশে সমতলভূমি দেখতে পেয়ে সেখানেই বসতি স্থাপন করল। পরে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলল, এস আমরা ইঁট তৈরী করে ভাল করে পোড়াই। এইভাবে তারা পাথরের বদলে ইঁট ও চূণ-সুরকির বদলে আলকাতরা সংগ্রহ করল। তারপর তারা বলল, এস এবার আমরা নিজেদের জন্য একটি নগর এবং আকাশ ছোঁয়া একটি মিনার তৈরী করে নিজেদের নাম প্রতিষ্ঠা করি, তা না হলে সারা পৃথিবীতে আমরা বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ব।
পরে প্রভু পরমেশ্বর মানব সন্তানদের দ্বারা নির্মিত নগর ও মিনার দেখার জন্য স্বর্গ থেকে নেমে এলেন। তিনি বললেন, দেখ, এরা সকলেই এক জাতি ও এক ভাষাভাষী। এটি তাদের কীর্তির সূচনা, এর পরে তারা যা কিছু করার সঙ্কল্প করবে তা থেকে তাদের নিবৃত্ত করা যাবে না। চল, আমরা নীচে গিয়ে ওদের ভাষার মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করি যাতে ওরা একে অন্যের কথা বুঝতে না পারে। তখন প্রভু পরমেশ্বর তাদের সেখান থেকে সারা পৃথিবীতে বিক্ষিপ্ত করে দিলেন, ফলে তাদের নগর নির্মাণ স্থগিত হয়ে গেল। এইজন্যই সেই নগরের নাম হল বাবেল (বিভেদ)। কেননা সেখানে প্রভু পরমেশ্বর সারা পৃথিবীর ভাষায় বিভেদ সৃষ্টি করেছিলেন এবং সেখান থেকেই তিনি মানব-সন্তানদের সারা পৃথিবীতে বিক্ষিপ্ত করে দিয়েছিলেন।

শেম-এর বংশ বৃত্তান্ত নিম্নরূপঃ শেম-এর একশো বছর বয়সে, প্লাবনের দুই বছর পরে আরফাকষাদের জন্ম হল। আরফাকষাদের জন্মের পরে শেম আরও পাঁচশো বছর জীবিত থেকে আরও পুত্রকন্যার জন্ম দিলেন। আরফাকষাদের পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে শেলাহ্-এর জন্ম হল। শেলাহ্-এর জন্মের পর আরফাকষাদ চারশো তিন বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। শেলাহ্-এর ত্রিশ বছর বয়সে এবেরের জন্ম হল। এবেরের জন্মের পর শেলাহ্ চারশো তিন বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। এবেরের চৌত্রিশ বছর বয়সে পেলেগের জন্ম হল। পেলেগের জন্মের পর এবের চারশো ত্রিশ বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। পেলেগের ত্রিশ বছর বয়সে রেয়ুর জন্ম হল। রেয়ুর জন্মের পর পেলেগ দুশো নয় বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। রেয়ুর বত্রিশ বছর বয়সে সেরুগের জন্ম হল। সেরুগের জন্মের পর রেয়ূ দুশো সাত বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। সেরুগের ত্রিশ বছর বয়সে নাহোরের জন্ম হল। নাহোরের জন্মের পর সেরুগ দুশো বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। নাহোরের উনত্রিশ বছর বয়সে তেরাহ্-এর জন্ম হল।
তেরাহের জন্মের পর নাহোর একশো উনিশ বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন।
তেরাহ্ সত্তর বছর বয়সে অব্রাম, নাহোর ও হারোণের জনক হলেন।
তেরাহের বংশবৃত্তান্ত নিম্নরূপঃ তেরাহ্ ছিলেন অব্রাম, নাহোর ও হারোণের পিতা। হারোণ লোটের পিতা। কিন্তু হারোণ তাঁর পিতা তেরাহ্ জীবিত থাকতেই নিজ জন্মস্থান কলদীয়দের দেশে উর নামক স্থানে প্রাণত্যাগ করেন। অব্রাম ও নাহোর উভয়েই বিবাহিত ছিলেন। অব্রামের স্ত্রীর নাম সারী ও নাহোরের স্ত্রীর নাম ছিল মিলকা। এই স্ত্রী ছিলেন হারোণের কন্যা। হারোণ ছিলেন মিল্‌কা ও ইসকার পিতা। সারী ছিলেন বন্ধ্যা, তাঁর কোন সন্তান ছিল না।
তেরাহ্ তাঁর পুত্র অব্রাম ও হারোণের পুত্র ও তাঁর পৌত্র লোট এবং পুত্রবধূ অব্রামের স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কনান দেশে যাওয়ার জন্য কলদীয়দের দেশের উর নামক স্থান থেকে যাত্রা করলেন। কিন্তু তাঁরা হারাণ পর্যন্ত এসে সেখানেই বসতি স্থাপন করলেন। পরে দুশো পাঁচ বছর বয়সে হারাণেই তেরাহ্-র মৃত্যু হল।

കേൾക്കുക আদিপুস্তক 11