দ্বিতীয় বিবরণ 2
2
ইসরায়েলীদের মরুপ্রান্তরে যাত্রা
1প্রভু পরমেশ্বর আমাকে যেমন নির্দেশ দিয়েছিলেন সেই অনুসারে আমরা লোহিত সাগরের পথে মরু প্রান্তরে ফিরে যাওয়ার জন্য যাত্রা করলাম এবং বহু দিন ধরে সেয়ীরের পার্বত্য অঞ্চল প্রদক্ষিণ করলাম।#গণনা 21:4 2প্রভু পরমেশ্বর তখন আমাকে বললেন, 3তোমরা অনেকদিন এই পার্বত্য অঞ্চল প্রদক্ষিণ করছ, এবার উত্তর দিকে ফের, 4আর ইসরায়েলীদের তুমি এই আদেশ দাও: সেয়ীর প্রদেশ নিবাসী তোমাদের জ্ঞাতিবর্গের অর্থাৎ এষৌর বংশধরদের দেশের মধ্য দিয়ে এখন তোমাদের যেতে হবে। যদিও তারা তোমাদের দেখে ভীত হবে, তবুও তোমরা সাবধান হয়ো,#আদি 36:8 5তাদের সঙ্গে বিবাদ করো না, কারণ তাদের দেশের কোন অংশ, এমন কি পাদ পরিমিত ভূমিও আমি তোমাদের দেব না। কেননা সেয়ীরের পার্বত্য অঞ্চলের স্বত্বাধিকার আমি এষৌকে দিয়েছি। 6তোমরা তাদের কাছ থেকে অর্থ দিয়ে খাদ্য ও জল কিনে খাবে। 7কারণ তোমাদের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বর তোমাদের সমস্ত কর্মে আশীর্বাদ দান করেছেন, সুবিশাল এই প্রান্তরের মধ্য দিয়ে যাত্রাকালে তোমাদের তত্ত্বাধান করেছেন, এই চল্লিশ বছর কাল তোমাদের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বর তোমাদের সঙ্গে আছেন এবং তোমাদের কোন কিছুরই অভাব ঘটে নি।
8পরে আমরা আরাবা উপত্যকার পথে এলাৎ এবং ইৎসিয়োন-গেবের হয়ে সেয়ীর অঞ্চল নিবাসী আমাদের জ্ঞাতিবর্গ এষৌর বংশধরদের এলাকা পেরিয়ে মোয়াবের প্রান্তর অভিমুখে যাত্রা করলাম। 9প্রভু পরমেশ্বর তখন আমাকে বললেন, মোয়াব নিবাসীদের উপর তোমরা অত্যাচার করো না বা তাদের সঙ্গে যুদ্ধবিগ্রহে লিপ্ত হয়ো না। তাদের দেশের কোন অংশে আমি তোমাদের স্বত্বাধিকার দেব না। কারণ আমি লোটের বংশধরদের আর নগরের স্বত্বাধিকার দিয়েছি।#আদি 19:37 10(পূর্বকালে এমীয়েরা এখানে বাস করত, অনাকী দৈত্যদের মত তারাও ছিল দীর্ঘকায়, বিপুল সংখ্যক বিরাট এক জাতি। 11অনাকীদের মত তারাও রফায়িম বলে পরিচিত কিন্তু মোয়াবের লোকেরা তাদের বলত এমীয়। 12হোরী উপজাতির লোকেরাও এর আগে সেয়ীর অঞ্চলে বাস করত। কিন্তু এষৌর বংশধরেরা তাদের যুদ্ধে পরাজিত করে দেশ অধিকার করে সেখানে বসতি স্থাপন করেছিল। প্রভু পরমেশ্বর ইসরায়েলীদের যে দেশ দিয়েছিলেন সেই দেশেও তারা এই রকমই করেছিল।)
13তোমরা এখন সেরদ নদী পার হও। আমরা তখন সেরদ নদী পার হলাম। 14কাদেশ-বার্ণিয়া ছেড়ে চলে আসার পর থেকে সেরদ নদী পার হওয়া পর্যন্ত আমাদের আটত্রিশ বছর কেটে গেল। এই সময়ের মধ্যে ইসরায়েলীদের শিবির থেকে সেই প্রজন্মের যুদ্ধ করতে সক্ষম সমস্ত লোক নিঃশেষ হয়ে গেল, প্রভু পরমেশ্বর তাদের সম্পর্কে যেমন শপথ করেছিলেন তেমনই ঘটল।#গণনা 14:28-35 15ইসরায়েলী শিবির থেকে তারা নিঃশেষে উচ্ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত প্রভু পরমেশ্বর তাদের প্রতি বিমুখ হয়ে রইলেন।
16-17ইসরায়েলীদের মধ্য থেকে যুদ্ধ করতে সক্ষম সকল লোকের মৃত্যু হওয়ার পর প্রভু পরমেশ্বর আমাকে বললেন, 18আজ তোমরা মোয়াব দেশের সীমান্ত আর্ অতিক্রম করবে। 19তোমরা আম্মোনীদের সীমানায় প্রবেশ করলে তাদের উপর কোন অত্যাচার করো না, তাদের সঙ্গে বিবাদও করো না। আম্মোনীদের দেশে আমি তোমাদের কোন স্বত্বাধিকার দেব না, কারণ লোটের বংশধরদের আমি সেই দেশের উত্তরাধিকার দিয়েছি।#আদি 19:38 20(সেই দেশও রফায়িমদের দেশ বলে পরিচিত। রফায়িম জাতি পূর্বকালে সেখানে বাস করত। আম্মোনীরা তাদের বলে ‘সম্সুম্মিম’। 21তারা অনাকীদের মত দীর্ঘকায়, বিপুল সংখ্যক বিরাট এক জাতি। কিন্তু প্রভু পরমেশ্বর আম্মোনীদের সম্মুখে তাদের পরাজিত করলেন এবং তারা তাদের উচ্ছেদ করে সেখানে বসতি স্থাপন করল। 22প্রভু পরমেশ্বর সেয়ীর অঞ্চলনিবাসী এষৌর বংশধরদের জন্যও এই রকম করেছিলেন। প্রভু তাদের সম্মুখে হোরী জাতির লোকদের ধ্বংস করেছিলেন, তার ফলে তারা তাদের উচ্ছেদ করে সেখানে বসতি স্থাপন করল, আজ অবধি তারা সেখানেই বাস করছে। 23আর গাজা পর্যন্ত বিভিন্ন জনপদে অব্বীয় জাতির যে লোকেরা বাস করত কাপ্তোর থেকে আগত কাণ্ডোরীরা তাদের উচ্ছেদ করে সেখানে বসতি স্থাপন করল।)
24তোমরা এখন যাত্রার জন্য তৈরী হও, এবং আর্ণোন নদী পার হও। দেখ, আমি হিষ্বোনের রাজা ইমোরী সিহোনকে তার রাজ্যসমেত তোমাদের হাতে সমর্পণ করলাম। তোমরা তার দেশ অধিকার করতে আরম্ভ কর এবং তাকে যুদ্ধে প্ররোচিত কর। 25আজ থেকে আমি আকাশের নীচে সমস্ত জাতির মধ্যে তোমাদের সম্পর্কে সন্ত্রাস ও ভীতির সঞ্চার করব। তারা তোমাদের বিবরণ শুনে কম্পমান ও বিচলিত হবে।
হিষবোণের রাজা সিহোনের পরাজয়
(গণনা 21:21-30)
26আমি তখন কদেমোৎ প্রান্তর থেকে হিষ্বোণের রাজা সিহোনের কাছে দূতের মাধ্যমে এই শান্তির প্রস্তাব পাঠালাম: 27আপনি আপনার রাজ্যের মধ্য দিয়ে আমাদের যাওয়ার অনুমতি দিন। আমরা সোজা রাজপথ ধরে চলব, দক্ষিণে বা বামে কোন দিকে যাব না। 28আমাদের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বর আমাদের যে দেশ দিয়েছেন, জর্ডন পার হয়ে যতদিন আমরা সেই দেশে প্রবেশ না করি ততদিন আপনি অর্থের বিনিময়ে আমাদের খাদ্যশস্য ও পানীয় জল দিন। আমাদের শুধু পায়ে হেঁটে পার হয়ে যাবার অনুমতি দিন। 29সেয়ীর নিবাসী এষৌর বংশধরগণ এবং আর্ নিবাসী মোয়াবী জাতির লোকেরা আমাদের এই অনুমতি দিয়েছিল। 30কিন্তু হিষবোণের রাজা তাঁর রাজ্যের মধ্য দিয়ে আমাদের যাওয়ার অনুমতি দিলেন না। কারণ তোমাদের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বরের ইচ্ছায় তাঁর বুদ্ধিভ্রংশ ঘটলো এবং তিনি উদ্ধত ও জেদী হয়ে উঠলেন যাতে, আজকের মতই তিনি তোমাদের অধীনে সমর্পিত হন। 31প্রভু পরমেশ্বর আমাকে বললেন, দেখ, আমি সিহোনকে তার রাজ্য সমেত তোমাদের হাতে তুলে দিতে আরম্ভ করলাম। তোমরা তার রাজ্য অধিকার করতে শুরু কর। 32তখন সিহোন তাঁর সমস্ত লোকজন নিয়ে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য যাহাস্-এ এলেন। 33আর প্রভু পরমেশ্বর তাঁকে আমাদের হাতে সমর্পণ করলেন। আমরা তাঁকে, তাঁর পুত্রদের ও তাঁর লোকজন সকলকে হত্যা করলাম। 34সেই সময় আমরা তাঁর সমস্ত নগর অধিকার করলাম এবং নারী পুরুষ ও শিশু নির্বিশেষে নগরের সকলকে হত্যা করলাম। কাউকে অবশিষ্ট রাখলাম না। 35কেবল পশুপাল ও যে নগরগুলি আমরা অধিকার করেছিলাম সেগুলি থেকে লুন্ঠন করা জিনিসপত্র আমরা নিজেদের জন্য রাখলাম। 36আর্ণোন উপত্যকায় সীমান্তে অবস্থিত অরোয়ের থেকে শুরু করে উপত্যকার মধ্যস্থানে অবস্থিত গিলিয়দ পর্যন্ত কোন নগর ছিল না যা আমরা অধিকার করতে পারি নি। আমাদের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বর সবগুলিই আমাদের অধীনে সমর্পণ করলেন। 37কেবলমাত্র আম্মোনীদের দেশ যাব্বোক নদীর তীরবর্তী সকল প্রদেশ ও পার্বত্য অঞ্চলের নগরসমূহ এবং যেসব স্থানে আমাদের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বর আমাদের যেতে নিষেধ করেছিলেন সেই সব স্থানে তোমরা প্রবেশ কর নি।
Currently Selected:
দ্বিতীয় বিবরণ 2: BENGALCL-BSI
Highlight
Share
Copy

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Bengali C.L. Bible, পবিএ বাইবেল C.L.
Copyright © 2016 by The Bible Society of India
Used by permission. All rights reserved worldwide.