যোহন 4
4
যীশু ও শমরীয়া নারী
1যীশু জানতে পারলেন যে ফরিশীরা শুনতে পেয়েছে, বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের চেয়ে তিনি বেশি লোককে বাপ্তিষ্ম করছেন এবং শিষ্য করছেন।#যোহন 3:22-26 2প্রকৃতপক্ষে শিষ্যেরাই বাপ্তিষ্মদাতা করতেন, যীশু কিন্তু স্বয়ং এ কাজ করতেন না।#১ করি 1:17 3এ কথা শুনে তিনি যিহুদীয়া ত্যাগ করে আবার চলে গেলেন গালীল প্রদেশে 4শমরীয়া দেশের মধ্য দিয়ে যেতে হল তাঁকে।#লুক 9:52 5যাওয়ার পথে তিনি এলেন শমরীয়ার একটি শহরে, নাম সূকর। যাকোব তাঁর পুত্র যোষেফকে যে জমিটি দিয়েছিলেন, শহরটি তারই কাছে।#আদি 48:22; হিতো 24:32 6সেখানে যাকোবের কূপ নামে আখ্যাত একটি কূপ ছিল। তখন প্রায় দুপুর। পথশ্রমে ক্লান্ত হয়ে যীশু কুয়োর পাড়ে বসলেন।
7-8তাঁর শিষ্যেরা গেলেন শহরে খাবার কিনতে। এমন সময় শমরীয়াবাসিনী এক নারী এল জল তুলতে। যীশু তাকে বললেন, আমাকে জল দাও। 9সেই নারী বলল, আপনি একজন ইহুদী। কেমন করে আপনি আমার মত একজন শমরীয়া নারীর কাছে জল চাইছেন? (ইহুদীদের কাছে শমরীয়াবাসীরা ছিল অস্পৃশ্য।)#লুক 9:53 10যীশু তাকে উত্তর দিলেন, যদি তুমি জানতে ঈশ্বরের দানের কথা এবং যদি জানতে কে তোমায় বলছেন ‘আমাকে জল দাও’, তাহলে তুমিই তাঁর কাছে জল চাইতে এবং তিনি তোমাকে জীবনবারি দান করতেন।#যোহন 7:38-39 11সেই নারী তাঁকে বলল, মহাশয় আপনার তো কলসী নেই, আর কুয়োটিও গভীর। তাহলে কোথা থেকে আপনি জীবনবারি পাবেন? 12আপনি কি আমাদের পূর্বপুরুষ যাকোবের চেয়েও মহান? তিনিই আমাদের এই কূপ দান করেছেন। তিনি এবং তাঁর পুত্রেরাও এই কূপ থেকে জলপান করতেন এবং নিজেদের পশুপালকেও পান করাতেন।#যোহন 8:53 13যীশু বললেন, এ জল যারা পান করবে, তাদের আবার পিপাসা পাবে#যোহন 6:58 14কিন্তু আমি যে জল দেব তা যে পান করবে সে আর কখন তৃষ্ণার্ত হবে না। আমার দেওয়া জলে তার অন্তর থেকে উৎসারিত হবে অনন্ত জীবনের ধারা।#যোহন 6:27-35; 7:37-39 15সেই রমণী তখন যীশুকে বলল, মহাশয় তাহলে সেই জলই আমাকে দিন। আর যেন আমার পিপাসা না পায় আর জল তুলতেও এতদূর আসতে না হয়। 16যীশু তাকে বললেন, যাও, তোমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে এস। 17সে বলল, আমার স্বামী নেই। যীশু বললেন, ঠিক কথাই বলেছ তুমি, তোমার স্বামী নেই। 18কারণ তোমার পাঁচজন স্বামী ছিল এবং এখন যার সঙ্গে তুমি বাস করছ, সে তোমার স্বামী নয়। 19সুতরাং তোমার কথাই সত্যি। সে বলল, আপনি তো দেখছি একজন সত্য দ্রষ্টা নবী। 20আমাদের পিতৃপুরুষেরা এই পাহাড়ের উপরে উপাসনা করতেন কিন্তু আপনারা, ইহুদীরা বলেন যে, জেরুশালেমের মন্দিরেই ঈশ্বরের উপাসনা করতে হবে।#দ্বি.বি. 12:5; গীত 122:1-9 21যীশু তাকে বললেন, ভদ্রে, বিশ্বাস কর আমার কথা, এমন এক দিন আসছে, যেদিন তোমার পিতার উপাসনা এই পর্বতেও করবে না, জেরুশালেমেও করবে না।#সফ 2:11; মালা 1:11; ১ তিম 2:8 22তোমরা, শমরীয়েরা, যাঁকে উপাসনা কর তাঁকে জান না। কিন্তু আমরা যাঁকে উপাসনা করি তাঁকে জানি। তাই ইহুদীদের মধ্যে থেকেই আসবে পরিত্রাণ।#২ রাজা 17:29-41; যিশা 2:3; প্রেরিত 17:23 23কিন্তু এমন সময় আসছে, এমন কি এখনই সেই সময়, যখন প্রকৃত উপাসকেরা আত্মায় ও সত্যে পিতার উপাসনা করবে। পিতা এমন উপাসকেরই সন্ধান করেন। 24ঈশ্বর আত্মাস্বরূপ। তাঁর উপাসনা যারা করবে, আত্মায় ও সত্যেই তাদের উপাসনা করতে হবে। সেই নারী বলল, আমি জানি যে মশীহ আসছেন।#রোমীয় 2:1; ২ করি 3:17 25তিনি এসে সব কিছুই আমাদের বুঝিয়ে দেবেন।#যোহন 1:41 26যীশু তাকে বললেন, তোমার সঙ্গে কথা বলছি যে আমি, আমিই তিনি।#যোহন 9:37
27এমন সময় তাঁর শিষ্যেরা ফিরে এলেন এবং একটি নারীর সঙ্গে তাঁকে কথা বলতে দেখে অবাক হয়ে গেলেন। তবু কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলেন না যে, আপনি কি চাইছেন? বা ওর সঙ্গে আপনি কেনই বা কথা বলছেন? 28সেই নারী তখন কলসী ফেলে রেখে শহরে চলে গেল এবং লোকদের বলতে লাগল, 29একজনকে দেখবে এস, আমি যা কিছু করেছি, সব তিনি বলে দিয়েছেন। বোধহয় ইনিই সেই মশীহ। 30শহরের সকলেই তখন যীশুর কাছে গেল।
31এই অবসরে শিষ্যেরা তাঁকে অনুরোধ করে বললেন, গুরুদেব, এবার কিছু মুখে দিন। 32কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, আমার কাছে এমন খাদ্য আছে, যার কথা তোমরা জান না। 33এ কথায় শিষ্যেরা নিজেদের মধ্যে বলতে লাগলেন, কেউ তাহলে ওঁকে খাবার নে দিয়েছে। 34যীশু তাঁদের বললেন, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা পালন করা ও তাঁর কাজ সমাধা করাই হচ্ছে আমার আহার্য। 35তোমরাই তো বল, আর চার মাস পরে ফসল কাটার মরশুম আসছে। কিন্তু চেয়ে দেখ, তোমাদের আমি বলছি, মাঠের দিকে ভাল করে চেয়ে দেখ। ফসল এখনই পেকে গেছে, কাটার উপযুক্ত হয়েছে।#মথি 9:37; লুক 10:2 36ফসল যে কাটছে সে পাচ্ছে তার মজুরী, পাচ্ছে অনন্তজীবনের শস্যসম্ভার। যিনি বপন করেছেন এবং যে সংগ্রহ করেছে উভয়েই যেন আনন্দলাভ করতে পারে। 37এর দ্বারা এই প্রবচনের সত্যতা প্রমাণিত হচ্ছে যে, ‘একজন বোনে, আর একজন কাটে।’#মীখা 6:15 38আমি তোমাদের এমন শস্য আহরণ করতে পাঠাচ্ছি, যার জন্য তোমার পরিশ্রম কর নি। পরিশ্রম করেছে অন্যজন, আর তোমরা যাচ্ছ তাদের পরিশ্রমের ফসল আহরণ করতে।
39‘আমি যা কিছু করেছি সবই তিনি বলে দিয়েছেন,'-সেই নারীর এই সাক্ষ্যে শমরীয়া শহরের অনেক লোক তাঁকে বিশ্বাস করেছিল। 40তাই যীশুর কাছে এসে তারা তাঁকে তাদের সঙ্গে থাকতে অনুরোধ করল। যীশু সেখানে দুদিন থাকলেন। 41আরও অনেকে তাঁর বাণী শুনে তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন করল। 42এবং সেই রমণীকে তারা বলল, তবে তোমার কথা শুনে আমরা যে বিশ্বাস করেছি, তা নয়, কিন্তু তাঁর বাণী আমরা নিজেরা শুনেছি এবং জেনেছি যে ইনি প্রকৃতই জগতের উদ্ধারকর্তা।#১ যোহন 4:14
রাজকর্মচারীর বিশ্বাস
43দুদিন পর যীশু সেখান থেকে গালীল প্রদেশে চলে গেলেন।#মথি 4:12 44যীশু বলেছিলেন, কোন নবী স্বদেশে সম্মান পান না।#মথি 13:57; মার্ক 6:4; লুক 4:24 45গালীলে গিয়ে পৌঁছালে গালীলবাসীরা তাঁকে সম্বর্ধনা জানাল। কারণ তারণোৎসবের সময় তারা জেরুশালেমে গিয়েছিল এবং সেখানে যীশুর সমস্ত কার্যকলাপ দেখেছিল।#যোহন 2:23
46যেখানে যীশু জলকে দ্রাক্ষারসে পরিণত করেছিলেন, গালীলের সেই কান্না নগরে তিনি আবার গেলেন। কফরনাউম-এ একজন রাজকর্মচারী থাকতেন। তাঁর ছেলে অসুখে ভুগছিল।#যোহন 2:1-9 47যিহুদীয়া থেকে যীশু গালীল-এ এসেছেন শুনে তিনি যীশুর কাছে মিনতি জানালেন যেন যীশু তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁর মুমূর্ষ পুত্রকে সুস্থ করেন।#লুক 7:2; মথি 8:5 48যীশু তাঁকে বললেন, ঐশীশক্তির নিদর্শন কিম্বা অদ্ভুত কিছু না দেখলে কি তোমরা বিশ্বাস করতে পার না? সেই রাজকর্মচারী তাঁকে অনুরোধ করে বললেন,#যোহন 2:18; ১ করি 1:22 49গুরুদেব, আমার পুত্রের মৃত্যু হওয়ার আগে চলুন। 50যীশু তাঁকে বললেন, যাও তোমার পুত্রের মৃত্যু হবে না। 51যীশুর কথায় বিশ্বাস করে তিনি চলে গেলেন। বাড়িতে গিয়ে পৌঁছানোর আগেই তাঁর দাসেরা গিয়ে তাঁকে খবর দিল যে তাঁর ছেলে বেঁচে গেছে। 52তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, কখন সে সুস্থ হল? তারা বলল, গতকাল, বেলা একটার পর তার জ্বর ছেনে গেছে।
53বালকটির পিতা মনে করে দেখলেন, ঠিক সেই সময়ই যীশু তাঁকে বলেছিলেন, ‘তোমার ছেলে বেঁচে যাবে।’ এরপর তিনি এবং তাঁর পরিবারের সকলে যীশুর উপর বিশ্বাস স্থাপন করলেন।#লুক 19:9; প্রেরিত 16:15-31 54যিহুদীয়া থেকে গালীল-এ আসার পর এইটিই হল যীশুর ঐশীশক্তির দ্বিতীয় নিদর্শন।#যোহন 2:11
Okuqokiwe okwamanje:
যোহন 4: BENGALCL-BSI
Qhakambisa
Dlulisela
Kopisha
Ufuna ukuthi okuvelele kwakho kugcinwe kuwo wonke amadivayisi akho? Bhalisa noma ngena ngemvume
Bengali C.L. Bible, পবিএ বাইবেল C.L.
Copyright © 2016 by The Bible Society of India
Used by permission. All rights reserved worldwide.