যোহন ১৮
১৮
যীশুর শেষ দুঃখভোগ, মৃত্যু ও সমাধি
মহাযাজকের সম্মুখে যীশুর বিচার
1 এই সমস্ত বলিয়া যীশু আপন শিষ্যগণের সহিত বাহির হইয়া কিদ্রোণ স্রোত পার হইলেন; সেখানে এক উদ্যান ছিল, তাহার মধ্যে তিনি ও তাঁহার শিষ্যগণ প্রবেশ করিলেন। 2 আর যিহূদা, যে তাঁহাকে সমর্পণ করিয়াছিল, সে সেই স্থান জ্ঞাত ছিল, কারণ যীশু অনেক বার আপন শিষ্যগণের সঙ্গে সেই স্থানে একত্র হইতেন। 3 অতএব #মথি ২৬:৪৭-৭৫; মার্ক ১৪:৪৩-৭২; লূক ২২:৪৭-৭১ যিহূদা সেনাদলকে, এবং প্রধান যাজকদের ও ফরীশীদের নিকট হইতে পদাতিকদিগকে প্রাপ্ত হইয়া মশাল, দীপ ও অস্ত্রশস্ত্রের সহিত সেখানে আসিল। 4 তখন যীশু, আপনার প্রতি যাহা যাহা ঘটিতেছে, সমস্তই জানিয়া বাহির হইয়া আসিলেন, আর তাহাদিগকে কহিলেন, কাহার অন্বেষণ করিতেছ? 5 তাহারা তাঁহাকে উত্তর করিল, নাসরতীয় যীশুর। তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, আমিই তিনি। আর যিহূদা যে তাঁহাকে সমর্পণ করিতেছিল, সে তাহাদের সহিত দাঁড়াইয়াছিল। 6 তিনি যখন তাহাদিগকে বলিলেন, আমিই তিনি, তাহারা পিছাইয়া গেল, ও ভূমিতে পড়িল। 7 পরে তিনি তাহাদিগকে আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, কাহার অন্বেষণ করিতেছ? তাহারা বলিল, নাসরতীয় যীশুর। 8 যীশু উত্তর করিলেন, আমি ত তোমাদিগকে বলিলাম যে, আমিই তিনি; অতএব তোমরা যদি আমার অন্বেষণ কর, তবে ইহাদিগকে যাইতে দাও- 9 যেন তিনি এই যে কথা বলিয়াছিলেন, #যোহ ১৭:১২ তাহা পূর্ণ হয়, ‘তুমি আমাকে যে সকল লোক দিয়াছ, আমি তাহাদের কাহাকেও হারাই নাই।’ 10 তখন শিমোন পিতরের নিকটে খড়্গ থাকাতে তিনি তাহা খুলিয়া মহাযাজকের দাসকে আঘাত করিয়া তাহার দক্ষিণ কর্ণ কাটিয়া ফেলিলেন। সেই দাসের নাম মল্ক। 11 তখন যীশু পিতরকে কহিলেন, খড়্গ কোষে রাখ; আমার পিতা আমাকে যে পানপাত্র দিয়াছেন তাহাতে আমি কি পান করিব না?
12 তখন সেনাদল, এবং সহস্রপতি ও যিহূদিগণের পদাতিকেরা যীশুকে ধরিল, ও তাঁহাকে বন্ধন করিল, এবং প্রথমে হাননের কাছে লইয়া গেল; 13 কারণ যে কায়াফা সেই বৎসর মহাযাজক ছিলেন, ঐ হানন তাঁহার শ্বশুর। 14 এ সেই কায়াফা, যিনি যিহূদিগণকে এই পরামর্শ দিয়াছিলেন, প্রজালোকদের জন্য একজনের মরণ ভাল।
15 আর শিমোন পিতর এবং আর একজন শিষ্য যীশুর পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিলেন। সেই শিষ্য মহাযাজকের পরিচিত ছিলেন, এবং যীশুর সহিত মহাযাজকের প্রাঙ্গণে প্রবেশ করিলেন। 16 কিন্তু পিতর বাহিরে দ্বার-দেশে দাঁড়াইয়া রহিলেন। অতএব মহাযাজকের পরিচিত সেই অন্য শিষ্য বাহিরে আসিয়া দ্বার-রক্ষিকাকে বলিয়া পিতরকে ভিতরে লইয়া গেলেন। 17 তখন সেই দ্বার-রক্ষিকা দাসী পিতরকে কহিল, তুমিও কি সেই ব্যক্তির শিষ্যদের একজন? 18 তিনি কহিলেন, আমি নই। আর দাসেরা ও পদাতিকেরা কয়লার আগুন করিয়া দাঁড়াইয়াছিল, কারণ তখন শীত পড়িয়াছিল, আর তাহারা আগুন পোহাইতেছিল; এবং পিতরও তাহাদের সঙ্গে দাঁড়াইয়া আগুন পোহাইতেছিলেন।
19 ইতিমধ্যে মহাযাজক যীশুকে তাঁহার শিষ্যগণের ও শিক্ষার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিলেন। 20 যীশু তাহাকে উত্তর করিলেন, আমি স্পষ্টরূপে জগতের কাছে কথা কহিয়াছি; আমি সর্বদা সমাজ-গৃহে ও ধর্মধামে শিক্ষা দিয়াছি, যেখানে যিহূদীরা সকলে একত্র হয়; গোপনে কিছু কহি নাই। 21 আমাকে কেন জিজ্ঞাসা কর? যাহারা শুনিয়াছে, তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা কর, আমি কি বলিয়াছি; দেখ, আমি কি কি বলিয়াছি, ইহারা জানে। 22 তিনি এই কথা কহিলে পদাতিকদের একজন, যে নিকটে দাঁড়াইয়াছিল, সে যীশুকে চড় মারিয়া কহিল, মহাযাজককে এমন উত্তর দিলি? 23 যীশু তাহাকে উত্তর দিলেন, যদি মন্দ বলিয়া থাকি, সেই মন্দের সাক্ষ্য দেও; কিন্তু যদি ভাল বলিয়া থাকি, কি জন্য আমাকে মার? 24 পরে হানন বন্ধন অবস্থায় তাঁহাকে কায়াফা মহাযাজকের নিকটে প্রেরণ করিলেন।
25 শিমোন পিতর দাঁড়াইয়া আগুন পোহাইতেছিলেন। তখন লোকেরা তাঁহাকে কহিল, তুমিও কি উহার শিষ্যদের একজন? তিনি অস্বীকার করিলেন, বলিলেন, আমি নই। 26 মহাযাজকের এক দাস, পিতর যাহার কান কাটিয়া ফেলিয়াছিলেন, তাহার একজন কুটুম্ব কহিল, আমি কি উদ্যানে উহার সঙ্গে তোমাকে দেখি নাই? 27 তখন পিতর আবার অস্বীকার করিলেন, এবং তৎক্ষণাৎ মোরগ ডাকিয়া উঠিল।
দেশাধ্যক্ষের সম্মুখে যীশুর বিচার
28 পরে #মথি ২৭; মার্ক ১৫; লূক ২৩ লোকেরা যীশুকে কায়াফার নিকট হইতে রাজবাটীতে লইয়া গেল; তখন প্রত্যুষকাল; আর তাহারা যেন অশুচি না হয়, কিন্তু নিস্তারপর্বের ভোজ ভোজন করিতে পারে, এই জন্য আপনারা রাজবাটীতে প্রবেশ করিল না। 29 অতএব পীলাত বাহিরে তাহাদের কাছে গেলেন ও বলিলেন, তোমরা এই ব্যক্তির উপরে কি দোষারোপ করিতেছ? 30 তাহারা উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিল, এ যদি দুষ্কর্মকারী না হইত, আমরা আপনার হস্তে ইহাকে সমর্পণ করিতাম না। 31 তখন পীলাত তাহাদিগকে কহিলেন, তোমরাই উহাকে লইয়া যাও, এবং আপনাদের ব্যবস্থামতে উহার বিচার কর। যিহূদিগণ তাঁহাকে কহিল, কোন ব্যক্তিকে বধ করিতে আমাদের অধিকার নাই- যেন যীশুর সেই বাক্য পূর্ণ হয়, 32 যাহা বলিয়া তিনি দেখাইয়া দিয়াছিলেন, তাঁহার কি প্রকার মৃত্যু হইবে। #যোহ ১২:৩২,৩৩
33 তখন পীলাত আবার রাজবাটীতে প্রবেশ করিলেন, এবং যীশুকে ডাকিয়া তাঁহাকে বলিলেন, তুমিই কি যিহূদীদের রাজা? 34 যীশু উত্তর করিলেন, তুমি কি ইহা আপনা হইতে বলিতেছ? না অন্যেরা আমার বিষয়ে তোমাকে ইহা বলিয়া দিয়াছে? 35 পীলাত উত্তর করিলেন, আমি কি যিহূদী? তোমারই স্বজাতীয়েরা ও প্রধান যাজকেরা আমার নিকটে তোমাকে সমর্পণ করিয়াছে; 36 তুমি কি করিয়াছ? যীশু উত্তর করিলেন, আমার রাজ্য এ জগতের নয়; যদি আমার রাজ্য এ জগতের হইত, তবে আমার অনুচরেরা প্রাণপণ করিত, যেন আমি যিহূদীদের হস্তে সমর্পিত না হই; কিন্তু আমার রাজ্য ত এখানকার নয়। 37 তখন পীলাত তাঁহাকে বলিলেন, তবে তুমি কি রাজা? যীশু উত্তর করিলেন, তুমিই বলিতেছ যে আমি রাজা। আমি এই জন্যই জন্মগ্রহণ করিয়াছি ও এই জন্য জগতে আসিয়াছি, যেন সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিই। যে কেহ সত্যের, সে আমার রব শুনে। 38 পীলাত তাঁহাকে বলিলেন, সত্য কি?
ইহা বলিয়া তিনি আবার বাহিরে যিহূদীদের কাছে গেলেন, এবং তাহাদিগকে বলিলেন, আমি ত ইহার কোনই দোষ পাইতেছি না। 39 কিন্তু তোমাদের এমন এক রীতি আছে যে, আমি নিস্তারপর্বের সময়ে তোমাদের জন্য এক ব্যক্তিকে ছাড়িয়া দিই; ভাল, তোমরা কি ইচ্ছা কর যে, আমি তোমাদের জন্য যিহূদীদের রাজাকে ছাড়িয়া দিব? 40 তাহারা আবার চেঁচাইয়া কহিল, ইহাকে নয়, কিন্তু বারাব্বাকে। সেই বারাব্বা দস্যু ছিল।
Šiuo metu pasirinkta:
যোহন ১৮: বিবিএস
Paryškinti
Dalintis
Kopijuoti
Norite, kad paryškinimai būtų įrašyti visuose jūsų įrenginiuose? Prisijunkite arba registruokitės
Copyright © 2023 Bangladesh Bible Society. All rights reserved.