২ রাজাবলি 25

25
জেরুশালেমের পতন
(২ বংশা 36:13-21; যির 52:3-11)
1সেদেকিয়াহ্ ব্যাবিলনরাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন। রাজা নেবুকাডনেজার তখন সেদেকিয়াহ্‌র রাজত্বের নবম বছরের দশম মাসের দশম দিনে সসৈন্যে এসে জেরুশালেম অবরোধ করলেন। নগরের বাইরে তাঁরা সৈন্য সমাবেশ করলেন এবং নগরের চারিদিকে নজরদারির জন্য কক্ষযুক্ত সুউচ্চ স্তম্ভ গড়ে তুললেন।#যির 21:1-10; 34:1-5; যিহি 24:2 2সেদেকিয়াহ্‌র রাজত্বের একাদশ বছর পযর্ন্ত নগর অবরোধ করে রাখলেন। 3সেই বছরেরই চতুর্থ মাসের নবম দিনে নগরে দুর্ভিক্ষের অবস্থা এমন ভয়াবহ হল যে লোকদের খাবার বলতে কিছুই রইল না। 4ব্যাবিলনীয়রা নগরের চারিদিক ঘিরে রাখা সত্ত্বেও নগরের সৈন্যরা রাজার সঙ্গে রাতের অন্ধকারে প্রাচীর ভেঙ্গে পালিয়ে গেল। রাজোদ্যানের পথে দুই প্রাচীরের মাঝখানের দ্বার দিয়ে তারা জর্ডন উপত্যকার দিকে পালাল।#যিহি 33:21 5কিন্তু ব্যাবিলনীয় সৈন্যরা রাজা সেদেকিয়াহ্‌র পিছনে তাড়া করে জেরিকোর সমতলভূমির কাছে তাঁকে ধরে ফেলল। তাঁর সৈন্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল। 6সেদেকিয়াহ্‌কে রিব্‌লায় রাজা নেবুকাডনেজারের কাছে নিয়ে যাওয়া হল। রাজা তাঁকে দণ্ড দিলেন। 7সেদেকিয়াহ্‌র চোখের সামনেই তাঁর ছেলেদের হত্যা করা হল। তারপর নেবুকাডনেজারের আদেশে সেদেকিয়াহ্‌র চোখ উপড়ে ফেলা হল এবং তাঁকে শৃঙ্খলিত করে ব্যাবিলনে নিয়ে যাওয়া হল।#যিহি 12:13
মন্দির ধ্বংস
(যির 52:12-23)
8ব্যাবিলনরাজ নেবুকাডনেজারের রাজত্বের ঊনিশতম বছরের পঞ্চম মাসের সপ্তম দিনে ব্যাবিলনরাজের পরামশর্দাতা ও রাজার দেহরক্ষীদলের সেনাপতি নেবুজারদান জেরুশালেমে এলেন 9এবং প্রভু পরমেশ্বরের মন্দির, রাজপ্রাসাদ ও জেরুশালেমের বিশিষ্ট গণ্যমান্য লোকের সমস্ত ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিলেন। 10তাঁর সৈন্যবাহিনী নগরের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলল। 11তারপর নেবুজারদান জেরুশালেমের অবশিষ্ট কারিগর ও অধিবাসীদের এবং যারা ব্যাবিলনীয়দের পক্ষে যোগ দিয়েছিল, তাদের সকলকে ব্যাবিলনে নিয়ে গেলেন। 12কিন্তু তিনি যিহুদীয়ার দীনদরিদ্র সহায়-সম্বলহীন ভূমিহীন লোকদের রেখে গেলেন এবং সেখানকার আঙুর ক্ষেত ও ক্ষেতখামারের কাজে নিযুক্ত করে গেলেন।
13প্রভু পরমেশ্বরের মন্দিরের ব্রোঞ্জের স্তম্ভগুলি, ব্রোঞ্জের গাড়ি এবং বিরাট জলাধারা তারা ভেঙ্গে ফেলল এবং সেগুলির সমস্ত ব্রোঞ্জ নিয়ে গেল।#১ রাজা 7:15-16; ২ বংশা 3:15-17 14বেদী পরিষ্কার করার ছাইদান, হাতা ও চিমটা, বাতির শল্‌তে ছাঁটা কাঁচি, বলিদানের রক্ত রাখার গামলা, ধূপদানি এবং মন্দিরে উপাসনার সময় ব্যবহৃত অন্যান্য সব ব্রোঞ্জের জিনিস তারা নিয়ে গেল।#১ রাজা 7:45; ২ বংশা 4:16 15তারা সোনা ও রূপোর সমস্ত জিনিস এমন কি জ্বলন্ত কয়লা নেবার জন্য সোনার ছোট ছোট পাত্রগুলিও নিয়ে গেল। 16রাজা শলোমন মন্দিরের জন্য যে দুটি ব্রোঞ্জের স্তম্ভ, জলাধার ও গাড়ী তৈরী করিয়েছিলেন, সেগুলি এত ভারী ছিল যে তা ওজন করা সম্ভব হয়নি। 17স্তম্ভ দুটির উচ্চতা ছিল আঠেরো হাত। এগুলির মাথায় তিনহাত উঁচু চূড়া বসানো ছিল। চূড়ার চারদিকে ব্রোঞ্জের ডালিম দিয়ে সাজানো ছিল।
যিহুদীয়ার অধিবাসীদের ব্যাবিলনে নির্বাসন
(যির 52:24-27)
18এছাড়াও প্রধান পুরোহিত সেরাইয়াকে, সহকারী পুরোহিত সফনিয়কে এবং মন্দিরের আরও তিনজন প্রধান কর্মচারীকে সেনাপতি নেবুজারদান বন্দী করে নিয়ে গেলেন। 19একজন সেনাপতিকে ও তাঁর সচিব তথা সামরিক দলিল রক্ষককে, রাজার পাঁচজন মন্ত্রণাদাতাকে, গণ্যমান্য ষাটজন নাগরিককে শহরে পেয়ে তিনি 20এঁদের হমাৎ-এর অন্তর্গত রিবলায় ব্যাবিলন রাজের কাছে নিয়ে গেলেন। 21রাজার আদেশে তাঁদের কশাঘাত করা হল এবং তারপর হত্যা করা হল। এইভাবে যিহুদীয়ার অধিবাসীরা নিজের দেশ থেকে নির্বাসিত হয়েছিল।
যিহুদীয়ার প্রশাসক গদলিয়
(যির 40:7-9; 41:1-3)
22রাজা নেবুকাডনেজার অহিকামের পুত্র ও শাফনের পৌত্র গদলিয়কে যিহুদীয়ার অবশিষ্ট লোক, যাদের ব্যাবিলনে নির্বাসিত করা হয়নি, তাদের প্রশাসকরূপে নিযুক্ত করলেন। 23যিহুদীয়ার যে সমস্ত সেনাপতি ও সৈন্য আত্মসমর্পণ করে নি, তাঁরা এই সংবাদ শুনে মিস্‌পায় গদলিয়ের কাছে এসে জড়ো হলেন। নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েল, করেয়ার পুত্র যোহানন নটোফা নিবাসী তান্‌হুমেথের পুত্র সেরায়াহ্ এবং মাকাহ্ নিবাসী যেজানিয়া তাঁদের অধীনস্থ সৈন্যসামন্ত নিয়ে এসেছিলেন। 24গদলিয় তাঁদের আশ্বাস দিয়ে বললেন, ব্যাবিলনের রাজকর্মচারীদের ভয় করার কোন কারণ নেই। তোমরা এদেশে বাস কর এবং ব্যাবিলনরাজের অধীনতা স্বীকার কর। তাহলে তোমাদের সর্বৈব মঙ্গল হবে।
25কিন্তু সেই বছরেরই সপ্তম মাসে রাজপরিবারের এলিশামার পৌত্র তথা নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েল দশজন লোককে নিয়ে মিস্‌পায় গিয়ে গদলিয়কে হত্যা করলেন। তাঁর দলে যে সব ইসরায়েলী ও ব্যাবিলনের লোক ছিল, তাদেরও হত্যা করলেন। 26তারপর ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সেখানকার সমস্ত ইসরায়েলী ও তাদের সেনাপতিরা ব্যাবিলনীদের ভয়ে দেশ ছেড়ে মিশরে পালিয়ে গেল।#যির 43:5-7
কারাগার থেকে যিহোয়াখিনের মুক্তিলাভ
(যির 52:31-34)
27ইতিলমরোদক যে বছর ব্যাবিলনের রাজা হন, সেই বছর তিনি যিহুদীয়ারাজ যিহোয়াখিনের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দেন। যিহোয়াখিনের বন্দী হওয়ার সাঁইত্রিশ বছর পরে দ্বাদশ মাসের সাতাশ দিনের দিন তিনি মুক্তিলাভ করেন। 28ইতিলমরোদক তাঁর প্রতি অত্যন্ত সদয় ছিলেন এবং অন্যান্য যে সমস্ত রাজা তাঁর সঙ্গে ব্যাবিলনে নির্বাসিত হয়েছিলেন, তাঁদের চেয়ে তাঁকে উচ্চতর মর্যাদার আসন দিয়েছিলেন। 29যিহোয়াখিনকে বন্দীর পোশাক পরিবর্তন করার অনুমতি দেওয়া হল এবং বাকী জীবন তাঁকে রাজার সঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার অধিকার দেওয়া হল। 30যতদিন তিনি বেঁচেছিলেন, ততদিন তাঁকে দৈনিক প্রয়োজনের জন্য বৃত্তি দেওয়া হত।

Markierung

Teilen

Kopieren

None

Möchtest du deine gespeicherten Markierungen auf allen deinen Geräten sehen? Erstelle ein kostenloses Konto oder melde dich an.