২ বংশাবলি 25

25
যিহুদীয়ারাজ অমৎসিয়
(২ রাজা 14:2-6)
1অমৎসিয় পঁচিশ বছর বয়সে রাজা হন এবং জেরুশালেমে ঊনত্রিশ বছর রাজত্ব করেন। তাঁর জননী যিহোয়াদিন ছিলেন জেরুশালেমের কন্যা। 2প্রভু পরমেশ্বরের প্রীতিজনক কাজ করলেও তিনি একনিষ্ঠভাবে তা করতেন না। 3রাজশক্তি হাতের মুঠোর মধ্যে পাকাপাকি ভাবে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অমৎসিয় তাঁর পিতা রাজা যোয়াশের হত্যাকারী রাজকর্মচারীদের হত্যা করলেন। 4কিন্তু এই হত্যাকারীদের সন্তানদের তিনি হত্যা করলেন না কারণ মোশির বিধানশাস্ত্রে পরমেশ্বরের এই আদেশ লেখা আছেঃ সন্তানের পাপের দায়ে পিতা-মাতার মৃত্যু হবে না অথবা পিতা-মাতার পাপের দায়ে সন্তানের মৃত্যু হবে না। কিন্তু প্রত্যেকে নিজের পাপের ফলে মৃত্যুদণ্ড পাবে।#দ্বি.বি. 24:16
ইদোমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
(২ রাজা 14:7)
5রাজা অমৎসিয় যিহুদীয়া ও বিন্যামীন গোষ্ঠীর সমস্ত লোককে একত্র করে তাদের পিতৃকুল অনুসারে দুটি ভাগে বিভক্ত করে দলবদ্ধ করলেন। তারপর তাদের একটি ভাগের লোকদের এক একজন সেনাপতির অধীনে একশো জন লোকের এক একটি দল এবং অপর ভাগের লোকদের এক একজন সেনাপতির অধীনে এক সহস্র লোকের এক একটি দল দিয়ে সৈন্যদল সাজালেন। এই সৈন্যদলে ছিল কুড়ি বছর ও তার ঊর্ধ্ববয়স্ক তিন লক্ষ লোক। এরা ছিল কৌশলী যোদ্ধা, বর্শা ও ঢাল ব্যবহারে নিপুণ। 6অধিকন্তু তিনি ইসরায়েল দেশ থেকে একশো তালন্ত#25:6 একশো তালন্ত =3,400 কিলোগ্রাম রূপো রূপো দিয়ে এক লক্ষ সৈন্য ভাড়া করলেন। 7কিন্তু একজন প্রবক্তা নবী রাজার কাছে গিয়ে বললেন, এই ইসরায়েলী সৈন্যদের নেবেন না। প্রভু পরমেশ্বর উত্তর রাজ্যের এই লোকদের সহায় নন। 8আপনি ভাবতে পারেন, এই সৈন্যরা যুদ্ধে আপনার ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে কিন্তু আপনাকে বিজয়ী করার কিম্বা পরাজিত করার ক্ষমতা একমাত্র ঈশ্বরেরই আছে। তিনিই আপনাকে শত্রুহস্তে পরাজিত করবেন।
9অমৎসিয় নবীকে জিজ্ঞাসা করলেন, তাহলে আমি যে সমস্ত রূপো ওদের দিলাম, তার কি হবে? নবী বললেন, প্রভু পরমেশ্বর আপনাকে তার চেয়ে বেশি দিতে পারেন। 10তখন অমৎসিয় ভাড়া করা সৈন্যদের ফিরিয়ে দিলেন, এবং তাদের বাড়ি ফিরে যেতে বললেন। তারা যিহুদীয়ার লোকদের উপর অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে বাড়ি ফিরে গেল।
11রাজা অমৎসিয় সাহসে ভর করে তাঁর সৈন্যবাহিনীকে লবণ উপত্যকায় পরিচালনা করে নিয়ে গেলেন। সেখানে দারুণ যুদ্ধে দশ হাজার ইদোমী সৈন্যকে বধ করলেন 12আরও দশ হাজার সৈন্যকে বন্দী করে নিয়ে গেলেন সেলা নগরের পর্বতের চূড়ায়। সেখান থেকে তাদের নীচে ফেলে দেওয়া হয়, তারা সকলে মারা গেল।
13ওদিকে, রাজা অমৎসিয় যে ইসরায়েলী সৈন্যদের ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, তারা শমরিয়া ও বেথ-হোরণ-এর মধ্যবর্তী অঞ্চলের যিহুদীয়ার অধীনস্থ সমস্ত নগর আক্রমণ করে তিন হাজার অধিবাসীকে হত্যা করল এবং প্রচুর জিনিসপত্র লুঠ করে নিয়ে গেল।
14ইদোমীদের পরাজিত করে ফিরে আসার সময় রাজা অমৎসিয় তাদের প্রতিমাগুলি নিয়ে এলেন এবং সেগুলিকে প্রতিষ্ঠা করে ধূপ-দীপ দিয়ে পূজার্চনা করতে লাগলেন। 15এতে প্রভু পরমেশ্বর অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলেন এবং তাঁর কাছে একজন নবীকে পাঠালেন। নবী এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কেন ঐ দেবতাদের উপাসনা করছেন যে দেবতারা তাদের নিজেদের ভক্তদের তোমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারল না?
16অমৎসিয় তাঁকে বাধা দিয়ে বললেন, কবে থেকে তোমায় রাজার পরামর্শদাতা নিযুক্ত করা হয়েছে? চুপ কর, নইলে তোমাকে হত্যা করব।নবী চুপ করলেন ঠিকই কিন্তু তার আগে বললেন, এবার বুঝেছি ঈশ্বর আপনাকে ধ্বংস করেত মনস্থ করেছেন, তাই আপনি এইসব কাজ করছেন এবং আমার পরামর্শ অবজ্ঞা করছেন।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
(২ রাজা 14:8-20)
17যিহুদীয়ারাজ অমৎসিয় এবং তাঁর পরামর্শদাতারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে আরম্ভ করলেন। অমৎসিয় তখন যিহোয়াহাসের পুত্র তথা যেহুর পৌত্র ইসরায়েলরাজ যিহোয়াশের কাছে যুদ্ধের আহ্বান জানিয়ে#25:17 যুদ্ধের আহ্বান জানিয়ে অথবা এক বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে দূত পাঠালেন। 18রাজা যিহোয়াশ তার উত্তরে বলে পাঠালেনঃ একদিন লেবাননের একটা কাঁটাঝোপ সীডার গাছের কাছে বলে পাঠাল যে, তোমার কন্যার সঙ্গে আমার পুত্রের বিবাহ দাও। তারপর একটা বুনো জানোয়ার সেই ঝোপের কাছ দিয়ে যাবার সময় মাড়িয়ে দিয়ে চলে গেল। 19অমৎসিয়, তুমি ইদোম জয় করেছ, ঠিক কথা। তবে তাতে তোমার অহঙ্কার খুব বেড়ে গেছে।আমার পরামর্শ হল, তুমি বাড়িতেই থাক। কেন অযথা বিপদ ডেকে আনছ? এতে তোমার নিজেরও সর্বনাশ হবে, সেই সাথে তোমার প্রজাদেরও সর্বনাশ হবে।
20কিন্তু অমৎসিয় তাঁর কথা গ্রাহ্য করলেন না। অমৎসিয়ের পরাজয়ই ঈশ্বর চেয়েছিলেন কারণ তিনি ইদোমীদের উপাস্য দেব প্রতিমার পূজা করতেন। 21ইসরায়েলরাজ যিহোয়াশ যিহুদীয়ার রাজা অমৎসিয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করলেন। যিহুদীয়ার বেথ-শেমেশে দুই দলের সংঘর্ষ হল। 22যিহুদীয়ার সৈন্যদল পরাজিত হয়ে যে যার বাড়িতে পালিয়ে গেল। 23রাজা যিহোয়াশ অমৎসিয়কে বন্দী করে জেরুশালেমে নিয়ে গেলেন। সেখানে গিয়ে তিনি ইফ্রয়িম দ্বার থেকে কোণের দ্বার পর্যন্ত প্রায় চারশো হাত প্রাচীর ভেঙ্গে ফেললেন। 24তারপর সেখান থেকে সমস্ত সোনা-রূপো, মন্দিরের সমস্ত জিনিষ-পত্র, রাজকোষের সমস্ত ধনরত্ন, এমন কি জামিনস্বরূপ কিছু লোককেও শমরিয়ায় নিয়ে গেলেন।
25ইসরায়েলরাজ যিহোয়াশের মৃত্যুর পর যিহুদীয়ারাজ অমৎসিয় আরও পনেরো বছর জীবিত ছিলেন। 26রাজা অমৎসিয় তাঁর রাজত্বের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু কাজ করেছিলেন, তার সমস্ত বিবরণ যিহুদীয়া ও ইসরায়েলের রাজবংশের ইতিহাসে লেখা আছে। 27প্রভু পরমেশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হবার পর থেকেই জেরুশালেমে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। শেষে তিনি লাখীশে পলায়ন করেন কিন্তু তাঁর শত্রুরা তাঁর অনুসরণ করে সেখানে গিয়ে তাঁকে হত্যা করে। 28তাঁর মৃতদেহ ঘোড়ার পিঠে চড়িয়ে জেরুশালেমে আনা হয়। তারপর দাউদ নগরে রাজপরিবারের সমাধিভূমিতে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

Markierung

Teilen

Kopieren

None

Möchtest du deine gespeicherten Markierungen auf allen deinen Geräten sehen? Erstelle ein kostenloses Konto oder melde dich an.