YouVersion Logo
Search Icon

দ্বিতীয় বিবরণ 2

2
মরুভূমিতে বনি-ইসরাইলরা
1“মাবুদ আমাকে যেমন নির্দেশ দিয়েছিলেন সেইভাবে আমরা তারপর পিছন ফিরে আকাবা উপসাগরের পথ ধরে মরুভূমির দিকে রওনা হলাম। সেয়ীরের পাহাড়ী এলাকা ঘুরে যেতে আমাদের অনেক দিন কেটে গেল। 2তারপর মাবুদ আমাকে বললেন, 3‘তোমরা অনেক দিন ধরে এই পাহাড়ী এলাকায় ঘুরছ; এইবার উত্তর দিকে ফের।’ 4তারপর তিনি আমাকে তোমাদের বলতে বললেন, ‘তোমাদের ভাই সেয়ীরের বাসিন্দা ইসের বংশধরদের রাজ্যের মধ্য দিয়ে এখন তোমাদের যেতে হবে। তোমাদের দেখে তারা ভয় পাবে কিন্তু তোমরা খুব সাবধান থেকো। 5তোমরা ইসের বংশধরদের যুদ্ধের উসকানি দেবে না, কারণ আমি তাদের দেশের কোন অংশই তোমাদের দেব না, এমন কি, পা রাখবার জায়গা পর্যন্ত না। আমি সেয়ীরের এই পাহাড়ী এলাকা ইস্‌কে তার নিজের দেশ হিসাবে দিয়েছি। 6তাদের কাছ থেকে খাবার ও পানি তোমাদের টাকা দিয়ে কিনে খেতে হবে।’
7“তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ সব কাজেই তোমাদের দোয়া করেছেন। এই মস্ত বড় মরুভূমির মধ্য দিয়ে যাবার সময়ে তিনি তোমাদের দেখাশোনা করেছেন। এই চল্লিশটা বছর তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ তোমাদের সংগেই থেকেছেন আর তোমাদের কোন কিছুর অভাব হয় নি।
8“কাজেই আমরা আমাদের ভাই সেয়ীরের বাসিন্দা ইসের বংশধরদের ছেড়ে চলে আসলাম। আরবার যে পথটা এলৎ ও ইৎসিয়োন-গেবর থেকে বের হয়ে এসেছে সেই পথ ছেড়ে আমরা মোয়াবের মরুভূমির পথ ধরে চলতে লাগলাম। 9তারপর মাবুদ আমাকে বললেন, ‘তোমরা মোয়াবীয়দের বিরক্ত কোরো না কিংবা যুদ্ধের উসকানি দিয়ো না, কারণ তাদের দেশের কোন অংশই আমি তোমাদের দেব না। আমি সম্পত্তি হিসাবে আর্‌ শহরটা লুতের বংশধরদের দিয়েছি।’ ”
10(আগে এমীয়রা ঐ এলাকায় বাস করত। এমীয় জাতির লোকেরা ছিল শক্তিশালী, সংখ্যায় অনেক এবং অনাকীয়দের মত লম্বা। 11অনাকীয়দের মত এমীয়দেরও রফায়ীয় বলা হত কিন্তু মোয়াবীয়রা তাদের বলত এমীয়। 12সেয়ীরে হোরীয়রা বাস করত, কিন্তু পরে ইসের বংশধরেরা তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। মাবুদ সম্পত্তি হিসাবে বনি-ইসরাইলদের যে দেশ দিয়েছিলেন সেখানে তারা যা করেছিল ইসের বংশধরেরাও ঠিক তা-ই করল; তারা হোরীয়দের ধ্বংস করে দিয়ে তাদের জায়গায় নিজেরা বাস করতে লাগল।)
13“তারপর মাবুদ বললেন, ‘এখন তোমরা উঠে সেরদ উপত্যকা পার হয়ে যাও।’ আর আমরা সেটা পার হয়ে আসলাম। 14কাদেশ-বর্ণেয় ছেড়ে সেরদ উপত্যকা পার হয়ে আসতে আমাদের আটত্রিশ বছর কেটে গিয়েছিল। কাদেশ-বর্ণেয় ছেড়ে আসবার আগে ছাউনিতে যে সব সৈন্য ছিল তারা সবাই এই আটত্রিশ বছরের মধ্যে মাবুদের কসম খেয়ে বলা কথা অনুসারে মারা গিয়েছিল। 15ছাউনি থেকে তাদের একেবারে ধ্বংস করে ফেলবার জন্য মাবুদ তাদের বিরুদ্ধে কাজ করছিলেন, যে পর্যন্ত না তারা শেষ হয়ে যায়।
16-18“সেই সব সৈন্যেরা মারা যাওয়ার পরে মাবুদ আমাকে বলেছিলেন, ‘আজ তোমাদের আর্‌ শহরের পাশ দিয়ে মোয়াব দেশের সীমানা ছেড়ে যেতে হবে। 19কিন্তু তোমরা যখন অম্মোনীয়দের কাছে গিয়ে পৌঁছাবে তখন তাদের বিরক্ত করবে না বা যুদ্ধের উসকানি দেবে না, কারণ অম্মোনীয়দের দেশের কোন অংশই আমি তোমাদের দেব না। লুতের বংশধরদের আমি সেটা সম্পত্তি হিসাবে দিয়ে দিয়েছি।’ ”
20ঐ দেশটাকে রফায়ীদের দেশ বলেও মনে করা হত, কারণ সেখানে তারা আগে বাস করত; অম্মোনীয়রা তাদের সম্‌সুম্মীয় জাতির লোক বলত। 21রফায়ীয়রা শক্তিশালী এবং সংখ্যায় অনেক ছিল। তারা ছিল অনাকীয়দের মত লম্বা। মাবুদ অম্মোনীয়দের দিয়ে তাদের ধ্বংস করে ফেলেছিলেন; অম্মোনীয়রা রফায়ীয়দের তাড়িয়ে দিয়ে তাদের জায়গায় বাস করছিল। 22মাবুদ ইসের বংশধরদের ব্যাপারেও সেই একই কাজ করেছিলেন। তিনি তাদের দিয়ে হোরীয়দের ধ্বংস করেছিলেন। তারা হোরীয়দের তাড়িয়ে দিয়ে তাদের জায়গা সেয়ীরে আজও বাস করছে। 23ক্রীট থেকে ক্রীটীয়রা এসে অব্বীয়দের ধ্বংস করে দিয়ে তাদের জায়গায় বাস করছিল। অব্বীয়রা তখন গাজা পর্যন্ত সমস্ত গ্রামে বাস করত।
24“তারপর মাবুদ বলেছিলেন, ‘তোমরা বের হয়ে পড় এবং অর্ণোন নদী পার হয়ে যাও। দেখ, আমি হিষ্‌বোনের আমোরীয় বাদশাহ্‌ সীহোন ও তার দেশ তোমাদের হাতে দিয়ে দিয়েছি। তোমরা তার দেশটা দখল করতে শুরু করে তাকে যুদ্ধে নামতে বাধ্য কর। 25আজ থেকে আমি দুনিয়ার সমস্ত জাতির মধ্যে তোমাদের সম্বন্ধে একটা ভয়ের ভাব ও কাঁপুনি ধরাতে শুরু করব। তারা তোমাদের কথা শুনলে কাঁপতে থাকবে এবং তোমাদের দরুন তাদের মনে ভীষণ দুশ্চিন্তা জাগবে।’
হিষ্‌বোনের বাদশাহ্‌ সীহোনের পরাজয়
26“এর পর আমি শান্তি বজায় রাখবার উদ্দেশ্যে কদেমোৎ মরুভূমি থেকে হিষ্‌বোনের বাদশাহ্‌ সীহোনের কাছে বলে পাঠালাম, 27‘আপনার দেশের মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে দিন। আমরা ডানে-বাঁয়ে না গিয়ে সদর রাস্তা ধরেই চলে যাব। 28-29আপনি টাকা নিয়ে আমাদের খাবার ও পানি দিন। আমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ যে দেশ আমাদের দিতে যাচ্ছেন জর্ডান নদী পার হয়ে সেখানে না পৌঁছানো পর্যন্ত আপনি কেবল আমাদের পায়ে হেঁটে আপনার দেশটা পার হয়ে যেতে দিন। সেয়ীরের বাসিন্দা ইসের বংশধরেরা এবং আর্‌ শহরের বাসিন্দা মোয়াবীয়রাও আমাদের পার হয়ে যেতে দিয়েছে।’ 30কিন্তু হিষ্‌বোনের বাদশাহ্‌ সীহোন তাতে রাজী হলেন না। তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ তাঁর মন কঠিন করেছিলেন ও অন্তর একগুঁয়েমিতে ভরে দিয়েছিলেন যাতে তিনি তোমাদের হাতে পড়েন, আর এখন তা-ই ঘটেছে।
31“পরে মাবুদ আমাকে বললেন, ‘দেখ, সীহোন ও তার রাজ্য আমি তোমার হাতে তুলে দিতে শুরু করেছি। তুমি এখন গিয়ে তার দেশটা জয় করবার কাজে হাত দাও এবং সেখানে বাস করতে শুরু কর।’
32-33“এর পর যখন সীহোন তাঁর সৈন্য-সামন্ত নিয়ে বের হয়ে যহসে আমাদের সংগে যুদ্ধ করতে আসলেন তখন আমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ তাঁকে আমাদের হাতে এনে দিলেন। আমরা তাঁকে, তাঁর সব ছেলেদের এবং তাঁর সৈন্যদলকে ধ্বংস করলাম। 34সেই সময়ে আমরা তাঁর সমস্ত গ্রাম ও শহর দখল করে নিলাম এবং তাদের পুরুষ, স্ত্রীলোক ও ছেলেমেয়েদের একেবারে ধ্বংস করে ফেললাম; তাদের কাউকেই আমরা বাঁচিয়ে রাখি নি। 35কিন্তু পশুপাল এবং শহর থেকে লুট করা জিনিসপত্র আমরা নিজেদের জন্য নিয়ে আসলাম। 36অর্ণোন উপত্যকার কিনারায় অরোয়ের শহর এবং সেই উপত্যকার মধ্যেকার গ্রামটা থেকে শুরু করে গিলিয়দ পর্যন্ত এমন কোন শক্তিশালী গ্রাম বা শহর রইল না যা আমরা জয় করে নিতে পারি নি। আমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ সেগুলো সবই আমাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। 37কেবল অম্মোনীয়দের জায়গা, যব্বোক নদীর কিনারার জায়গা, পাহাড়ের মধ্যেকার জায়গা এবং অন্যান্য যে সব জায়গায় যেতে তিনি নিষেধ করেছিলেন, সেই সব জায়গায় তোমরা যাও নি।

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in