YouVersion Logo
Search Icon

জবুর শরীফ 18

18
জবুর
প্রধান বাদ্যকরের জন্য। মাবুদের গোলাম দাউদের; যেদিন মাবুদ সমস্ত দুশমনের হাত থেকে এবং তালুতের হাত থেকে দাউদকে উদ্ধার করলেন, সেদিন তিনি মাবুদের উদ্দেশে এই গজলের কথা নিবেদন করলেন। তিনি বললেন,
1হে মাবুদ! তুমিই আমার শক্তি!
আমি তোমাকেই মহব্বত করি।
2মাবুদ আমার শৈল, আমার দুর্গ,
ও আমার উদ্ধারকর্তা, আমার আল্লাহ্‌, আমার দৃঢ় শৈল,
আমি তাঁর কাছে আশ্রয় নিয়েছি;
আমার ঢাল, আমার নাজাতের শৃঙ্গ, আমার উচ্চদুর্গ।
3আমি প্রশংসনীয় মাবুদকে ডাকব,
এভাবে আমার দুশমনদের থেকে আমি নিস্তার পাব।
4আমি মৃত্যুর দড়িতে বাঁধা পড়েছিলাম,
ধ্বংসের খরস্রোতে আশঙ্কিত ছিলাম।
5আমি পাতালের দড়িতে বাঁধা পড়েছিলাম,
মৃত্যুর ফাঁদে জড়িত ছিলাম।
6সঙ্কটে আমি মাবুদকে ডাকলাম,
আমার আল্লাহ্‌র উদ্দেশে আর্তনাদ করলাম;
তাঁর গৃহ থেকে তিনি আমার মিনতি শুনলেন,
তাঁর সম্মুখে আমার আর্তনাদ তাঁর কর্ণে প্রবেশ করলো।
7তখন দুনিয়া টলতে লাগল, কাঁপতে লাগল,
পর্বতরাজির সমস্ত মূল বিচলিত হল ও টলতে লাগল,
কারণ তিনি জ্বলে উঠলেন।
8তাঁর নাসারন্ধ্র থেকে ধোঁয়া বের হল,
তাঁর মুখনির্গত আগুন গ্রাস করলো;
তাঁর কাছ থেকে বেরিয়ে আসল প্রজ্বলিত অঙ্গার।
9তিনি আসমানকে নুইয়ে নামলেন,
অন্ধকার তাঁর পদতলে ছিল।
10তিনি কারুবী আরোহণে উড্ডীন হলেন,
বায়ু-পক্ষভরে উড়ে আসলেন।
11তিনি অন্ধকারকে তাঁর অন্তরাল,
তাঁর চতুর্দিকস্থ তাঁবু করলেন;
পানির ঘন অন্ধকার ও আসমানের ঘন মেঘমালাকে চন্দ্রাতপ করলেন।
12তাঁর সম্মুখবর্তী তেজ থেকে মেঘমালা সরে গেল,
দেখা গেল শিলাবৃষ্টি ও প্রজ্বলিত অঙ্গার।
13আর মাবুদ আসমানে বজ্রনাদ করলেন,
সর্বশক্তিমান তাঁর কণ্ঠস্বর শুনালেন;
শিলাবৃষ্টি ও প্রজ্বলিত অঙ্গার দ্বারা।
14তিনি তাঁর তীর মারলেন, তাদেরকে ছিন্নভিন্ন করলেন;
অনেক বিদ্যুৎ চম্‌কিয়ে তাদেরকে বিশৃঙ্খল করলেন।
15তখন জলরাশির সমস্ত প্রণালী প্রকাশ পেল,
দুনিয়ার সমস্ত মূল অনাবৃত হল, তোমার তর্জনে,
হে মাবুদ, তোমার নাসিকার প্রশ্বাসবায়ুতে।
16তিনি উপর থেকে হাত বাড়িয়ে আমাকে ধরলেন,
মহাজলরাশি থেকে আমাকে টেনে তুললেন;
17তিনি আমাকে উদ্ধার করলেন
আমার বলবান দুশমন থেকে, আমার বিদ্বেষীদের থেকে,
কেননা তারা আমার চেয়ে শক্তিমান ছিল।
18আমার বিপদের দিনে তারা আমার কাছে এল,
কিন্তু মাবুদ আমার অবলম্বন হলেন।
19তিনি আমাকে বাইরে প্রশস্ত স্থানে আনলেন,
আমাকে উদ্ধার করলেন,
কেননা তিনি আমাতে সন্তুষ্ট ছিলেন।
20মাবুদ আমার ধার্মিকতানুযায়ী পুরস্কার দিলেন,
আমার হাতের পবিত্রতা অনুযায়ী ফল দিলেন।
21কেননা আমি মাবুদের পথে চলেছি,
দুষ্টতাপূর্বক আমার আল্লাহ্‌কে ছেড়ে যাই নি।
22কারণ তাঁর সমস্ত অনুশাসন আমার সম্মুখে ছিল,
আমি তাঁর বিধি আমা থেকে দূর করি নি।
23আর আমি তাঁর উদ্দেশে সিদ্ধ ছিলাম,
আমার অপরাধ থেকে নিজেকে রক্ষা করতাম।
24তাই মাবুদ আমার ধার্মিকতা অনুসারে ফল দিলেন,
তাঁর সাক্ষাতে আমার হাতের পবিত্রতা অনুসারে দিলেন।
25তুমি দয়াবানের সঙ্গে সদয় ব্যবহার করবে,
সিদ্ধের সঙ্গে সিদ্ধ ব্যবহার করবে।
26তুমি খাঁটিদের সঙ্গে খাঁটি ব্যবহার করবে,
কুটিলের সঙ্গে চতুরতা ব্যবহার করবে।
27কেননা তুমি দুঃখীদেরকে নিস্তার করবে,
কিন্তু গর্বিত নয়ন অবনত করবে।
28তুমিই আমার প্রদীপ উজ্জ্বল করে থাক;
মাবুদ, আমার আল্লাহ্‌,
তুমিই আমার অন্ধকার আলোকময় করে থাক।
29কেননা তোমার দ্বারা আমি সৈন্যদলের বিরুদ্ধে দৌড়াই;
আমার আল্লাহ্‌র দ্বারা প্রাচীর পার হই।
30তিনিই আল্লাহ্‌, তাঁর পথ সিদ্ধ;
মাবুদের কালাম পরীক্ষাসিদ্ধ;
যারা তোমার মধ্যে আশ্রয় নেয় তুমি তাদের সকলের ঢাল।
31কারণ মাবুদ ছাড়া আর আল্লাহ্‌ কে আছে?
আমাদের আল্লাহ্‌ ছাড়া আর শৈল কে আছে?
32আল্লাহ্‌ বল দিয়ে আমার কোমরবন্ধনী পরিয়েছেন।
তিনি আমার পথ সিদ্ধ করেছেন।
33তিনি আমার চরণ হরিণীর চরণের মত করেন,
উচ্চস্থলীতে আমাকে সংস্থাপন করেন।
34তিনি আমার হাতকে যুদ্ধ করতে শিক্ষা দেন,
তাই আমার বাহু ব্রোঞ্জের ধনুকে চাড়া দেয়।
35তুমি আমাকে নিজের উদ্ধার-ঢাল দিয়েছ;
তোমার ডান হাত আমাকে ধারণ করেছে,
তোমার কোমলতা আমাকে মহান করেছে।
36তুমি আমার নিচে চলার পথ প্রশস্ত করেছ,
আর আমার চরণ বিচলিত হয় নি।
37আমি দুশমনদের পিছনে দৌড়াব, তাদেরকে ধরবো,
সংহার না করে ফিরে আসব না।
38আমি তাদেরকে চূর্ণ করবো,
তারা আর উঠতে পারবে না,
তারা আমার পদতলে পতিত হবে।
39কারণ তুমি যুদ্ধার্থে বল দিয়ে আমার কোমর বেঁধেছ;
যারা আমার বিরুদ্ধে উঠেছিল,
তাদেরকে তুমি আমার অধীনে নত করেছ।
40আমার দুশমনদেরকে আমা থেকে ফিরিয়ে দিয়েছ,
আমি আমার বিদ্বেষীদেরকে সংহার করেছি।
41তারা আর্তনাদ করলো, কিন্তু রক্ষাকর্তা কেউ নেই;
মাবুদের কাছে কান্নাকাটি করলো, কিন্তু তিনি জবাব দিলেন না।
42তখন আমি তাদেরকে বায়ুচালিত ধূলিকণার মত চূর্ণ করলাম;
পথের কাদার মত ফেলে দিলাম;
43তুমি আমাকে লোকদের বিদ্রোহ থেকে উদ্ধার করেছ,
জাতিদের মস্তক হিসেবে নিযুক্ত করেছ;
আমার অপরিচিত জাতি অমার গোলাম হবে।
44শোনা মাত্র তারা আমার হুকুম মান্য করবে;
বিজাতি-সন্তানেরা আমার কর্তৃত্ব স্বীকার করবে।
45বিজাতি-সন্তানেরা ম্লান হবে,
স্বকম্পে নিজ নিজ গুপ্ত স্থান থেকে বাইরে আসবে।
46মাবুদ জীবন্ত, আমার শৈল ধন্য হোন,
আমার উদ্ধারের আল্লাহ্‌ উন্নত হোন।
47সেই আল্লাহ্‌ আমার পক্ষে প্রতিশোধ নেন,
জাতিদেরকে, আমার অধীনে দমন করেন।
48তিনি আমার দুশমনদের থেকে আমাকে উদ্ধার করেন;
যারা আমার বিরুদ্ধে উঠে,
তুমি তাদের উপরেও আমাকে উন্নত করছো,
তুমি দুর্বৃত্ত লোক থেকে আমাকে উদ্ধার করছো।
49এই কারণে, হে মাবুদ,
আমি জাতিদের মধ্যে তোমার প্রশংসা করবো,
তোমার নামের উদ্দেশে প্রশংসা-গজল করবো।
50তিনি তাঁর বাদশাহ্‌কে মহাবিজয় দান করেন,
তাঁর অভিষিক্ত ব্যক্তির প্রতি অটল মহব্বত প্রকাশ করেন,
যুগে যুগে দাউদ ও তার বংশের প্রতি রহম করেন।
 
 

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in