YouVersion Logo
Search Icon

প্রেরিত্‌ ৯

শৌলের মনপরিবর্তন ও সুসমাচার প্রচার
1 শৌল তখনও প্রভুর শিষ্যদের বিরুদ্ধে ভয় প্রদর্শন ও হত্যার নিশ্বাস টানিতেছিলেন; 2 তিনি #প্রেরিত্‌ ২২:৩-১৬; ২৬:১২-১৮ মহাযাজকের নিকটে গিয়া, দম্মেশকস্থ সমাজ সকলের প্রতি পত্র যাচ্ঞা করিলেন, যেন সেই পথাবলম্বী পুরুষ ও স্ত্রী যে সমস্ত লোককে পান, তাঁহাদিগকে বাঁধিয়া যিরূশালেমে আনিতে পারেন। 3 পরে তিনি যাইতে যাইতে দম্মেশকের নিকট উপস্থিত হইলেন, তখন হঠাৎ আকাশ হইতে আলোক তাঁহার চারিদিকে চমকিয়া উঠিল। 4 তাহাতে তিনি ভূমিতে পড়িয়া শুনিলেন, তাঁহার প্রতি এই বাণী হইতেছে, শৌল, শৌল, কেন আমাকে তাড়না করিতেছ? 5 তিনি কহিলেন, প্রভু, আপনি কে? প্রভু কহিলেন, আমি যীশু, যাঁহাকে তুমি তাড়না করিতেছ; 6 কিন্তু উঠ, নগরে প্রবেশ কর, তোমাকে কি করিতে হইবে, তাহা বলা যাইবে। 7 আর তাঁহার সহপথিকেরা অবাক হইয়া দাঁড়াইয়া রহিল, তাহারা ঐ বাণী শুনিল বটে, কিন্তু কাহাকেও দেখিতে পাইল না। 8 পরে শৌল ভূমি হইতে উঠিলেন, কিন্তু চক্ষু মেলিলে পর কিছুই দেখিতে পাইলেন না; আর তাহারা তাঁহার হস্ত ধরিয়া তাঁহাকে দম্মেশকে লইয়া গেল। 9 আর তিনি তিন দিন পর্যন্ত দৃষ্টিহীন থাকিলেন, এবং কিছুই ভোজন কি পান করিলেন না।
10 দম্মেশকে অননিয় নামে একজন শিষ্য ছিলেন। 11 প্রভু তাঁহাকে দর্শনযোগে কহিলেন, অননিয়। তিনি বলিলেন, প্রভু, দেখুন, এই আমি। তখন প্রভু তাঁহাকে কহিলেন, তুমি উঠিয়া সরল নামক পথে গিয়া যিহূদার বাটীতে তার্ষ নগরীয় শৌল নামক ব্যক্তির অন্বেষণ কর; 12 কেননা দেখ, সে প্রার্থনা করিতেছে; আর সে দেখিয়াছে, অননিয় নামে এক ব্যক্তি আসিয়া তাহার উপরে হস্তার্পণ করিতেছে, যেন সে দৃষ্টি পায়। 13 অননিয় উত্তর করিলেন, প্রভু, আমি অনেকের কাছে এই ব্যক্তির বিষয় শুনিয়াছি, সে যিরূশালেমে তোমার পবিত্রগণের প্রতি কত উপদ্রব করিয়াছে; 14 এই স্থানেও, যত লোক তোমার নামে ডাকে, সেই সকলকে বন্ধন করিবার ক্ষমতা সে প্রধান যাজকদের নিকটে পাইয়াছে। 15 কিন্তু প্রভু তাঁহাকে কহিলেন, তুমি যাও, কেননা জাতিগণের ও রাজগণের এবং ইস্রায়েল-সন্তানগণের নিকটে আমার নাম বহনার্থে সে আমার মনোনীত পাত্র; 16 কারণ আমি তাহাকে দেখাইয়া দিব, আমার নামের জন্য তাহাকে কত ক্লেশ ভোগ করিতে হইবে। 17 তখন অননিয় চলিয়া গিয়া সেই বাটীতে প্রবেশ করিলেন, এবং তাঁহার উপরে হস্তার্পণ করিয়া কহিলেন, ভ্রাতঃ শৌল, প্রভু, সেই যীশু, যিনি তোমার আসিবার পথে তোমাকে দর্শন দিলেন, তিনি আমাকে প্রেরণ করিয়াছেন, যেন তুমি দৃষ্টি পাও এবং পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হও। 18 আর অমনি তাঁহার চক্ষু হইতে যেন আঁইস পড়িয়া গেল, তিনি দৃষ্টিপ্রাপ্ত হইলেন, এবং উঠিয়া বাপ্তাইজিত হইলেন; 19 পরে আহার করিয়া বলপ্রাপ্ত হইলেন।
আর তিনি কয়েক দিন দম্মেশকস্থ শিষ্যগণের সঙ্গে থাকিলেন; 20 এবং অমনি সমাজ-গৃহে সমাজ-গৃহে যীশুকে এই বলিয়া প্রচার করিতে লাগিলেন যে, তিনিই ঈশ্বরের পুত্র। 21 আর যাহারা তাঁহার কথা শুনিল, তাহারা সকলে চমৎকৃত হইল, বলিতে লাগিল, এ কি সেই ব্যক্তি নয়, যে, এই নামে যাহারা ডাকে, তাহাদিগকে যিরূশালেমে উৎপাটন করিত, এবং এখানে এই জন্যই আসিয়াছিল, যেন তাহাদিগকে বন্ধন করিয়া প্রধান যাজকদের নিকটে লইয়া যায়? 22 কিন্তু শৌল উত্তর উত্তর শক্তিমান হইয়া উঠিলেন, এবং দম্মেশক-নিবাসী যিহূদীদিগকে নিরুত্তর করিতে লাগিলেন, প্রমাণ দিতে লাগিলেন যে, ইনিই সেই খ্রীষ্ট।
23 আর অনেক দিন গত হইলে যিহূদীরা তাঁহাকে বধ করিবার মন্ত্রণা করিল; 24 কিন্তু শৌল তাঁহাদের চক্রান্ত জানিতে পারিলেন। আর তাহারা যেন তাঁহাকে বধ করিতে পারে, এই জন্য নগর-দ্বার সকলও দিবারাত্র চৌকি দিতে লাগিল। 25 কিন্তু তাঁহার শিষ্যগণ তাঁহাকে রাত্রে লইয়া একটি ঝুড়িতে করিয়া প্রাচীর দিয়া নামাইয়া দিল।
26 পরে তিনি যিরূশালেমে উপস্থিত হইয়া শিষ্যবর্গের সহিত যোগ দিতে চেষ্টা করিলেন; কিন্তু সকলে তাঁহাকে ভয় করিল, তিনি যে শিষ্য, ইহা বিশ্বাস করিল না। 27 তখন বার্ণবা তাঁহার হাত ধরিয়া প্রেরিতদের নিকটে লইয়া গেলেন, এবং পথের মধ্যে তিনি কিরূপে প্রভুকে দেখিতে পাইয়াছেন, ও প্রভু যে তাঁহার সহিত কথা বলিয়াছেন, এবং কিরূপে তিনি দম্মেশকে যীশুর নামে সাহসপূর্বক প্রচার করিয়াছেন, এই সকল তাঁহাদের কাছে বর্ণনা করিলেন। 28 আর শৌল যিরূশালেমে তাঁহাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকিতেন, ভিতরে আসিতেন ও বাহিরে যাইতেন, প্রভুর নামে সাহসপূর্বক প্রচার করিতেন, 29 আর তিনি গ্রীক ভাষাবাদী যিহূদীদের সহিত কথোপকথন ও তর্ক করিতেন; কিন্তু তাহারা তাঁহাকে বধ করিবার জন্য চেষ্টা করিতে লাগিল। 30 ভ্রাতৃগণ ইহা জানিতে পাইয়া তাঁহাকে কৈসরিয়াতে লইয়া গেলেন, এবং সেখান হইতে তার্ষ নগরে পাঠাইয়া দিলেন।
পিতরের দুইটি অলৌকিক কার্য
31 তখন যিহূদিয়া, গালীল ও শমরিয়ার সর্বত্র মণ্ডলী শান্তিভোগ করিতে ও গ্রথিত হইতে লাগিল, এবং প্রভুর ভয়ে ও পবিত্র আত্মার আশ্বাসে চলিতে চলিতে বহুসংখ্যক হইয়া উঠিল।
32 আর পিতর সকল স্থানে ভ্রমণ করিতে করিতে লুদ্দা-নিবাসী পবিত্রগণের নিকটেও গেলেন। 33 সেই স্থানে তিনি ঐনিয় নামে এক ব্যক্তির দেখা পান; সে আট বৎসর শয্যাগত ছিল, তাহার পক্ষাঘাত হইয়াছিল। 34 পিতর তাহাকে কহিলেন, ঐনিয়, যীশু খ্রীষ্ট তোমাকে সুস্থ করিলেন, উঠ, তোমার শয্যা তুলিয়া লও। 35 তাহাতে সে তৎক্ষণাৎ উঠিল। তখন লুদ্দা ও শারোণ-নিবাসী সমস্ত লোক তাহাকে দেখিতে পাইল, এবং তাহারা প্রভুর প্রতি ফিরিল।
36 আর যাফোতে এক শিষ্যা ছিলেন, তাঁহার নাম টাবিথা, অনুবাদ করিলে এই নামের অর্থ দর্কা [হরিণী]; তিনি নানা সৎক্রিয়া ও দানকার্যে ব্যাপৃত ছিলেন। 37 ঘটনাক্রমে সেই সময়ে তিনি পীড়িত হইয়া মারা পড়েন। তাহাতে লোকেরা তাহাকে ধৌত করিয়া উপরের কুঠরিতে শয়ন করাইয়া রাখিল। 38 আর লুদ্দা যাফোর নিকটবর্তী হওয়াতে, পিতর লুদ্দায় আছেন শুনিয়া, শিষ্যগণ তাঁহার কাছে দুই জন লোক পাঠাইয়া বিনতি করিল, আপনি আমাদের এখান পর্যন্ত আসিতে বিলম্ব করিবেন না। 39 তখন পিতর উঠিয়া তাহাদের সহিত চলিলেন। তিনি তথায় উপস্থিত হইলে তাহারা তাঁহাকে সেই উপরের কুঠরিতে লইয়া গেল, আর বিধবারা সকলে তাঁহার চারিদিকে দাঁড়াইয়া রোদন করিতে থাকিল, এবং দর্কা তাহাদের সঙ্গে থাকিবার সময়ে যে সকল আঙ্‌রাখা ও বস্ত্র প্রস্তুত করিয়াছিলেন, সেই সকল দেখাইতে লাগিল। 40 কিন্তু পিতর সকলকে বাহির করিয়া দিয়া হাঁটু পাতিয়া প্রার্থনা করিলেন; পরে সেই দেহের দিকে ফিরিয়া কহিলেন, টাবিথা, উঠ। তাহাতে তিনি চক্ষু মেলিলেন, এবং পিতরকে দেখিয়া উঠিয়া বসিলেন। 41 তখন পিতর হাত দিয়া তাহাকে উঠাইলেন, এবং পবিত্রগণকে ও বিধবাদিগকে ডাকিয়া তাঁহাকে জীবিত দেখাইলেন। 42 এই কথা যাফোর সর্বত্র প্রকাশ হইল, এবং অনেক লোক প্রভুর উপরে বিশ্বাস করিল। 43 আর পিতর অনেক দিন যাফোতে, শিমোন নামক একজন চর্মকারের বাটীতে অবস্থিতি করিলেন।

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in

YouVersion uses cookies to personalize your experience. By using our website, you accept our use of cookies as described in our Privacy Policy