YouVersion Logo
Search Icon

বিলাপ গীতি 2

2
জেরুশালেম দণ্ডিত
1প্রভু পরমেশ্বর নিদারুণ ক্রোধে সিয়োন কন্যাকে ঘন মেঘের অন্ধকারে করেছেন আচ্ছন্ন,
স্বর্গ থেকে নিক্ষিপ্ত করেছেন তিনি ইসরায়েলের ঐশ্বর্য বৈভব সেই দুরন্ত ক্রোধের দিনে
স্মরণে আনেন নি তিনি তাঁর পাদ পীঠখানি।
2যিহুদীয়া নগরীর প্রতিটি গ্রাম বিনষ্ট করেছেন প্রভু পরমেশ্বর
দুঃসহ নির্মম ক্রোধে, চুর্ণ করেছেন সুরক্ষিত দুর্গগুলি।
ইসরায়েলের রাজ্য ও শাসককুলকে করেছেন ভূলুন্ঠিত চরম অসম্মানে।
3প্রজ্বলিত রোষে ইসরায়েলের শক্তি করেছেন হরণ, শত্রু সম্মুখে যখন,
তিনি তখন বিরূপ, বিমুখ সাহায্য দানে।
আগুনের শিখার মত জ্বলন্ত ক্রোধে তিনি ভস্মীভূত করেছেন চারিদিক।
4স্বয়ং ঈশ্বর আজ আমাদের বিপক্ষে,
শত্রুর মত আমাদের তিনি করেছেন তাঁর ধনুর্বাণের লক্ষ্য।
সিয়োনকন্যার শিবিরে নয়নরঞ্জন ছিল যারা,
যারা ছিল আমাদের গর্বের ও আনন্দের ধন, তাদের তিনি করেছেন নিধন স্বহস্তে।
তাঁর রোষবহ্নি জেরুশালেমের উপর হয়েছে বর্ষিত, যা মর্মে মর্মে অনুভব করেছে নগরবাসী।
5শত্রুর মত প্রবল আক্রোশে প্রভু পরমেশ্বর ধ্বংস করেছেন ইসরায়েলকুল,
দুর্গ ও প্রাসাদরাজি ধ্বংসস্তূপে হয়েছে পরিণত, যিহুদীয়া নগরীর জনগণ নিমগ্ন হয়েছে সীমাহীন শোকের সাগরে।
এখন ক্রন্দন ও বিলাপ তাদের চিরসঙ্গী।
6যে পবিত্র স্থানে তাঁর আরাধনা হত,
তিনি করেছেন চূর্ণ সেই পুণ্যবেদী নির্দিষ্ট পবিত্র উৎসবের দিন আর ‘সাব্বাথ’ দিনগুলির ঘটিয়েছেন তিনি পরিসমাপ্তি।
রাজা ও পুরোহিত ক্রোধাগ্নিতে তাঁর দগ্ধ সমভাবে।
7প্রভু পরমেশ্বর তাঁর মন্দিরের বেদী পরিত্যাগ করেছেন নিতান্ত অবজ্ঞায়, সে স্থান আজ জনশূন্য মানুষের পায়ের চিহ্ন পড়ে না সেখানে।
সিয়োনের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলার অধিকার তুলে দিয়েছেন তিনি শত্রুদের হাতে।
সেখানে শত্রুদল মুখর জয়োল্লাসে, যেখানে একদিন আমরা পরমানন্দে করতাম তাঁর আরাধনা।
8সিয়োন নগরীর বেষ্টনী ভেঙ্গে ফেলার সঙ্কল্পে সুদৃঢ় প্রভু পরমেশ্বর
চরম বিনাশের জন্য নিলেন প্রস্তুতি।
স্তম্ভরাজি ও দুর্গপ্রাকার একই সাথে হল ভূলুন্ঠিত।
9নগরীর তোরণদ্বার পরিণত প্রস্তর স্তূপে,
দ্বারের অর্গল আজ খণ্ড-বিখণ্ড রাজারা ও রাজপুরুষেরা এখন নির্বাসনে।
বিধান ও অনুশাসন কেউ আর শোখায় না সেখানে, নবীরাও পায় না আর দিব্য দর্শন।
10জেরুশালেমের প্রবীণদল মাটিতে বসে থাকে স্তব্ধ, নীরব,
মাথায় ধূলোমাখা, পরণে চটের বসন।
কুমারী কন্যারা নতশিরে লুটায় ভূমিতে।
11কেঁদে কেঁদে নয়ন আমার হয়েছে সারা, হৃদয় আমার মগ্ন বিষাদে,
স্বজনের এই চরম বিনাশে দুঃখে ও শোকে বিদীর্ণ হয়েছি আমি।
দুগ্ধপোষ্য শিশু সন্তানেরা মূর্ছিতপ্রায় নগরীর পথে পথে।
12জননীর কাছে শিশুরা কাঁদে, বলে, ‘কোথায় অন্ন, কোথায় জল?’
তারা পথের উপর লুটিয়ে পড়ে আহত জনের মত,
তারপর ধীরে মাতার বক্ষে ঢলে পড়ে চিরনিদ্রায়।
13জেরুশালেম! আমার প্রিয়তমা সিয়োন-নন্দিনী, কি ভাবে দেব প্রবোধ তোমায়?
কেমনে বা দিই সান্ত্বনা! এত দুঃখ কোথাও পেয়েছে কি কেউ?
এই দুর্দশা তোমার সীমাহীন সাগরের মত, এতটুকু আশার আলো নেই কোথাও।
14তোমরা নবীরা মিথ্যা বই সত্য বলে নি,
প্রতারণা করেছে ভুল শিক্ষা দিয়ে,
পাপের স্বরূপ করেনি উদ্ঘাটন যাতে অনুতাপ আসে তোমার মনে। তোমাকে তারা পরিচালিত করেছে বিপথে।
15ভগ্নদশায় পতিত জেরুশালেম,
নগরীর পাশ দিয়ে পথচারী পথিক চলে যায়, হেসে করে বিদ্রূপ, বলে,
‘এই কি সেই অনুপমা সুন্দরী নগরী, বিশ্বের গর্বের ধন?’
16ঘৃণায় তারা রক্তচক্ষু মেলে, ব্যঙ্গবাণে তাকে করে জর্জরিত,
উৎকট উল্লাসে চীৎকার করে বলে, ‘আমরা ধ্বংস করেছি তাকে।
তার সর্বনাশ দেখব বলে,এই দিনটিরই প্রতীক্ষায় ছিলাম আমরা।’
17প্রভু পরমেশ্বরের উদ্দেশ্য আজ সিদ্ধ, পূর্ণ তাঁর মনোরথ,
পূর্ব অভিপ্রায় মত আমাদের তিনি নির্মমভাবে বিনষ্ট করেছেন,
শত্রুদল জয়ী আজ তাঁরই ইচ্ছায়, আমাদের পতনে উল্লসিত তারা।
18হে সিয়োন-কন্যা, উচ্চৈঃস্বরে কাঁদো প্রভু জগদীশ্বরের কাছে,
চোখের জলের প্লাবন বইয়ে দাও অবিরাম।
19রাত্রির প্রহরে প্রহরে জাগ, অবিরল অশ্রু ধারায় উজাড় করে দাও হৃদয় তোমার প্রভুর চরণে,
ভিক্ষা চাও সন্তানদের প্রাণ,
পথের কোণে কোণে অনাহারে মরছে যারা।
20হে প্রভু, ঈশ্বর আমার, চেয়ে দেখ, কার এই দুর্দশা করেছ তুমি?
নারীরা আপন স্নেহলালিত সন্তানদের করবে কি ভক্ষণ?
পবিত্র মন্দিরে পুরোহিত ও নবীরা বিসর্জন দেবে কি প্রাণ?
21নবীন ও প্রবীণেরা সমভাবে পথের ধূলায় দিয়েছে প্রাণ,
তরুণ-তরুণী শত্রুর তরবারিতে হয়েছে নিহত।
প্রচণ্ড ক্রোধে তুমি নিধন করেছ তাদের নির্মম হাতে।
22তুমিই আমন্ত্রণ করে এনেছিলে শত্রুদলকে নারকীয় এক ভীষণ মৃত্যু-লীলায় মেতে উঠতে,
সেদিন নিস্তার পায় নি কেউ। তোমার নিদারুণ কোপানল থেকে স্নেহে
পালিত সন্তানেরা আমার নিহত হয়েছে শত্রুকুলের হাতে।

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in

Video for বিলাপ গীতি 2