YouVersion Logo
Search Icon

যিরমিয় 52

52
জেরুশালেমের পতন#২ রাজা 24:18—25:7 দ্রষ্টব্য
1সিদিকিয় যখন যিহুদীয়ার রাজা হন তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র একুশ বছচর। তাঁর রাজধানী জেরুশালেমে তিনি রাজত্ব করেন এগারো বছর। তাঁর মায়ের নাম হামুতাল, তিনি ছিলেন লিব্‌নানিবাসী যিরমিয়ের কন্যা। 2রাজা যিহোয়াকিমের মত রাজা সিদিকিয়ও প্রভু পরমেশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করেছিলেন। 3তাই, প্রভু পরমেশ্বর জেরুশালেম ও যিহুদীয়ার মানুষের উপর এত ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন যে তাদের তিনি তাঁর চোখের সামনে থেকে দূর করে দিয়েছিলেন, পাঠিয়েছিলেন নির্বাসনে।
ব্যাবিলনরাজ নেবুকাডনেজারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন রাজা সিদিকিয়। 4তাই রাজা সিদিকিয়ের রাজত্বের নবম বৎসরের দশম মাসের দশম দিনে নেবুকাডনেজার তাঁর সমগ্র সৈন্যবাহিনী নিয়ে জেরুশালেম আক্রমণ করেছিলেন। তিনি নগরের বাইরে শিবির সন্নিবেশ করেছিলেন, তার চারদিক ঘিরে রচনা করেছিলেন অবরোধের দৃঢ় বেষ্টনী।#যিহি 24:2 5রাজা সিদিকিয়ের রাজত্বের একাদশ বৎসর পর্যন্ত এই অবরোধ স্থায়ী ছিল। 6সেই বছরের চতুর্থ মাসের নবম দিনে, দুর্ভিক্ষ যখন চরমে উঠেছিল, মানুষের ঘরে খাদ্যশস্যের একটি কণাও অবশিষ্ট ছিল না, তখনই ভেঙ্গে ফেলা হল নগরের প্রাকার। 7যদিও ব্যাবিলনীয়েরা নগর ঘিরে রেখেছিল, তা সত্ত্বেও সমস্ত সৈন্যবাহিনী রাতের অন্ধকারে পালিয়ে বেঁচেছিল। রাজ উদ্যানের মধ্য দিয়ে, সংলগ্ন দুটি দেওয়ালের মাঝের গলিপথ ধরে তারা জর্ডন উপত্যকার দিকে পালিয়ে গেল।#যিহি 33:21 8ব্যাবিলনীয় সেনারা কিন্তু রাজা সিদিকিয়ের পিছু ধাওয়া করে যেরিকোর কাছে তাঁকে ধরে ফেলল। তাঁর সৈন্যবাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল। 9সিদিকিয়কে নিয়ে যাওয়া হল নেবুকাডনেজারের কাছে। নেবুকাডনেজার তখন হমাৎ অঞ্চলের রিবলা নগরীতে ছিলেন। সেখানে তিনি সিদিকিয়কে দণ্ড দিলেন। 10রিবলাতে সিদিকিয়ের চোখের সামনে তাঁর ছেলেদের হত্যা করা হল এবং যিহুদীয়ার সমস্ত রাজকর্মচারীদেরও তাঁর সামনে হত্যা করা হল। 11তারপর সিদিকিয়ের চোখ দুটি উপড়ে ফেলা হল এবং তাঁকে শিকলে বেঁধে ব্যাবিলনে নিয়ে যাওয়া হল। মৃত্যুর সময় পর্যন্ত সিদিকিয় ব্যাবিলনের কারাগারেই বন্দী ছিলেন।#যিহি 12:13
মন্দির ধ্বংস#২ রাজা 25:8-17 দ্রষ্টব্য
12ব্যাবিলনরাজ নেবুকাডনেজারের রাজত্বের ঊনিশতম বৎসরের পঞ্চম মাসের দশম দিনে রাজার পরামর্শদাতা ও রাজার দেহরক্ষীদলের সৈন্যাধ্যক্ষ নেবুসর্দন সসৈন্যে জেরুশালেমে প্রবেশ করলেন। 13তিনি প্রভু পরমেশ্বরের মন্দির, রাজপ্রাসাদ ও জেরুশালেমের বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমস্ত ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিলেন।#১ রাজা 9:8 14তাঁর সৈন্যবাহিনী নগর-প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলল। 15তারপর নেবুসর্দন জেরুশালেমের অবশিষ্ট অধিবাসীদের, দক্ষ শ্রমিকদের এবং যারা ব্যাবিলনীয়দের পক্ষে যোগ দিয়েছিল, তাদের সকলকে বন্দী করে ব্যাবিলনে নিয়ে গেলেন। 16কিন্তু যিহুদীয়ার কিছু হত-দরিদ্র, ভূমিহীন ও সহায় সম্বলহীন আনুষকে সেখানকার আঙুরক্ষেত ও ক্ষেতখামারের দেখাশুনার জন্য দেশে রেখে গেলেন।
17ব্যাবিলনীয়েরা প্রভু পরমেশ্বরের মন্দিরের ব্রোঞ্জের স্তম্ভগুলি, ব্রোঞ্জের গাড়ি এবং বিরাট জলাধারটি ভেঙ্গে ফেলল এবং সেগুলির সমস্ত ব্রোঞ্জ নিয়ে গেল।#১ রাজা 7:15-47 18তারা বেদী পরিষ্কার করার ছাইদান, হাতা ও চিম্‌টা এবং বলিদানের রক্ত রাখা গামলা, প্রদীপের সলতে উসকানোর শিক, ধূপদানী এবং আরও নানারকম ব্রোঞ্জের জিনিসপত্রর যেগুলি মন্দিরের কাজে ব্যবহার করা হত, সব তারা নিয়ে গেল। 19সোনা-রূপার সমস্ত জিনিস, এমন কি ছোট ছোট বাটি, জ্বলন্ত কয়লা নেবার জন্য সোনার ছোট ছোট পাত্র, বলিদানের রক্ত নেবার পাত্র, পিলসূজ, ছাইদানী, ধূপদানী, সুরা উৎসর্গের জন্য ব্যবহৃত গামলা সবই তারা নিয়ে গেল। 20রাজা শলোমন মন্দিরের জন্য যে সমস্ত ব্রোঞ্জের জিনিষ তৈরী করিয়েছিলেন—দুটি স্তম্ভ, জলাধার এবং ঐ জলাধার রাখার জন্য বারোটি বৃষের সমস্ত ব্রোঞ্জ তারা নিয়ে গেল। সেগুলি এত ভারী ছিল যে, তা ওজন করা সম্ভব হয় নি। 21-22স্তম্ভ দুটি দেখতে ছিল একই রকম। এগুলির উচ্চতা ছিল আঠেরো হাত, আর ব্যাস ছিল বারো হাত। স্তম্ভ দুটির ভিতর ছিল ফাঁপা এবং চার আঙুল পুরু। সেগুলির মাথায় পাঁচ হাত উঁচু ব্রোঞ্জের চূড়া বসানো ছিল। চূড়ার চারিদিকে জালি নক্‌শা করা ব্রোঞ্জের ডালিম দিয়ে সাজানো ছিল। 23প্রত্যেকটি স্তম্ভের জালি নকশার মধ্যে একশোটা ডালিম ছিল, তার মধ্যে নীচে থেকে নিরানব্বইটা ডালিম স্পষ্ট দেখা যেত।
যিহুদীয়ার অধিবাসীদের ব্যাবিলনে নির্বাসন#২ রাজা 25:18-21,27-30 পদ দ্রষ্টব্য
24সৈন্যাধ্যক্ষ নেবুসর্দন এছাড়াও প্রধান পুরোহিত সফনিয়কে এবং মন্দিরের আরও তিনজন বিশিষ্ট কর্মচারীকে বন্দী করে নিয়ে গেলেন। 25নগর থেকে একজন সৈন্যাধ্যক্ষ ও তাঁর সচিব তথা সামরিক দলিল-রক্ষককে, রাজার সাতজন মন্ত্রণাদাতাকে এবং নগরের ষাটজন গণ্যমান্য ব্যক্তিকে বন্দী করে নিয়ে গেলেন। এঁরা তখনও নগরে থেকে গিয়েছিলেন। 26হমাতের অন্তর্গত রিবলায় ব্যাবিলনরাজের কাছে নেবুসর্দন এঁদের নিয়ে গেলেন। 27রাজার আদেশে তাদের নির্মম কশাঘাতের পর হত্যা করা হয়।
এইভাবে যিহুদীয়ার অধিবাসীদের দেশ থেকে নির্বাসনে নিয়ে যাওয়া হল। 28রাজা নেবুকাডনেজার যাদের বন্দীরূপে নিয়ে গিয়েছিলেন, এখানে তার বিবরণ দেওয়া হলঃ সপ্তম বৎসরে রাজা হিসাবে তিনি নিয়ে গিয়েছিলেন 3,023 জন লোককে, 29অষ্টাদশ বৎসরে জেরুশালেম থেকে 832 জনকে এবং 30তেইশতম বৎসরে নেবুসর্দন নিয়ে গিয়েছিলেন 745 জনকে। সবশুদ্ধ 4,600 জন লোককে নির্বাসনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
যিহোয়াখিনের মুক্তিলাভ
31ইবিল মরোদক যে বৎসর ব্যাবিলনের রাজা হন, সেই বৎসরে তিনি যিহুদীয়ারাজ যিহোয়াখিনের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দেন। যিহোয়াখিন বন্দী হওয়ার সাঁইত্রিশ বৎসর পরে দ্বাদশ মাসের সাতাশ দিনের দিন মুক্তিলাভ করেন। 32ইবিল মরোদক তাঁর প্রতি অত্যন্ত সদয় ছিলেন এবং যে সমস্ত রাজা তাঁর সঙ্গে ব্যাবিলনে নির্বাসিত হয়েছিলেন, তাঁদের চেয়ে তাঁকেই উচ্চতর মর্যাদার আসন দিয়েছিলেন। 33যিহোয়াখিনকে বন্দীর পোষাক পরিত্যাগ করতে অনুমতি দেওয়া হল এবং বাকী জীবন তাঁকে রাজার সঙ্গে ভোজন করার অধিকার দেওয়া হল। 34যতদিন তিনি বেঁচেছিলেন, ততদিন তাঁকে তাঁর দৈনিক প্রয়োজনের জন্য বৃত্তি দেওয়া হত।

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in