ইব্রীয়। 11
11
বিশ্বাস-বীরসমূহ।
1আর বিশ্বাস প্রত্যাশিত বিষয়ের নিশ্চয়জ্ঞান, অদৃশ্য বিষয়ের প্রমাণ প্রাপ্তি। 2কারণ এই সম্বন্ধেই প্রাচীনগণের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া হইয়াছিল।
3বিশ্বাসে আমরা বুঝিতে পারি যে, যুগকলাপ ঈশ্বরের বাক্য দ্বারা রচিত হইয়াছে, সুতরাং কোন প্রত্যক্ষ বস্তু হইতে এই সকল দৃশ্য বস্তুর উৎপত্তি হয় নাই।
4বিশ্বাসে হেবল ঈশ্বরের উদ্দেশে কয়িন অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ যজ্ঞ উৎসর্গ করিলেন,#আদি 4:4। এবং তদ্দ্বারা তাঁহার পক্ষে এই সাক্ষ্য দেওয়া হইয়াছিল যে, তিনি ধার্ম্মিক; ঈশ্বর তাঁহার উপহারের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়াছিলেন; এবং তদ্দ্বারা তিনি মৃত হইলেও এখনও কথা কহিতেছেন।
5বিশ্বাসে হনোক লোকান্তরে নীত হইলেন, যেন মৃত্যু না দেখিতে পান; তাঁহার উদ্দেশ আর পাওয়া গেল না, কেননা ঈশ্বর তাঁহাকে লোকান্তরে লইয়া গেলেন।#আদি 5:24। বস্তুতঃ লোকান্তরে নীত হইবার পূর্ব্বে তাঁহার পক্ষে এই সাক্ষ্য দেওয়া হইয়াছিল যে, তিনি ঈশ্বরের প্রীতির পাত্র ছিলেন। 6কিন্তু বিনা বিশ্বাসে প্রীতির পাত্র হওয়া কাহারও সাধ্য নয়; কারণ যে ব্যক্তি ঈশ্বরের নিকটে উপস্থিত হয়, তাহার ইহা বিশ্বাস করা আবশ্যক যে ঈশ্বর আছেন, এবং যাহারা তাঁহার অন্বেষণ করে, তিনি তাহাদের পুরস্কারদাতা।
7বিশ্বাসে নোহ, যাহা যাহা তখন দেখা যাইতেছিল না, এমন বিষয়ে আদেশ পাইয়া ভক্তিযুক্ত ভয়ে আবিষ্ট হইয়া আপন পরিবারের ত্রাণার্থে এক জাহাজ নির্ম্মাণ করিলেন,#11:7 আদি 6-8 অধ্যায়। এবং তদ্দ্বারা জগৎকে দোষী করিলেন ও আপনি বিশ্বাসানুরূপ ধার্ম্মিকতার অধিকারী হইলেন।
8বিশ্বাসে অব্রাহাম, যখন আহূত হইলেন,#আদি 12:1,4। তখন যে স্থান অধিকারার্থে প্রাপ্ত হইবেন, সেই স্থানে যাইবার আজ্ঞা মান্য করিলেন, এবং কোথায় যাইতেছেন তাহা না জানিয়া যাত্রা করিলেন। 9বিশ্বাসে তিনি বিদেশের ন্যায় প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবাসী হইলেন, তিনি সেই প্রতিজ্ঞার সহাধিকারী ইস্হাক ও যাকোবের সহিত তাম্বুতেই বাস করিতেন; 10কারণ তিনি ভিত্তিমূলবিশিষ্ট সেই নগরের অপেক্ষা করিতেছিলেন, যাহার স্থাপনকর্ত্তা ও নির্ম্মাতা ঈশ্বর।
11বিশ্বাসে স্বয়ং সারাও বংশ উৎপাদনের শক্তি পাইলেন, যদিও তাঁহার অতিরিক্ত বয়স হইয়াছিল, কেননা তিনি প্রতিজ্ঞাকারীকে বিশ্বাস্য জ্ঞান করিয়াছিলেন। 12এই জন্য এক ব্যক্তি হইতে, এমন কি, মৃতকল্প ব্যক্তি হইতে, এত লোক উৎপন্ন হইল, যাহারা সংখ্যায় আকাশের তারাগণের তুল্য, এবং সমুদ্রতীরস্থ গণনাতীত বালুকার তুল্য।#আদি 17:17-19।; 21:2।; 22:17।
13বিশ্বাসানুরূপে ইহাঁরা সকলে মরিলেন; ইহাঁরা প্রতিজ্ঞাকলাপের ফল প্রাপ্ত হন নাই, কিন্তু দূর হইতে তাহা দেখিতে পাইয়া সাদর সম্ভাষণ করিয়াছিলেন, এবং আপনারা যে পৃথিবীতে বিদেশী ও প্রবাসী, ইহা স্বীকার করিয়াছিলেন। 14কারণ যাঁহারা এরূপ কথা বলেন, তাঁহারা যে নিজ দেশের অন্বেষণ করিতেছেন, ইহাই স্পষ্ট ব্যক্ত করেন। 15আর যে দেশ হইতে বাহির হইয়াছিলেন, সেই দেশ যদি মনে রাখিতেন, তবে ফিরিয়া যাইবার সুযোগ অবশ্য পাইতেন। 16কিন্তু এখন তাঁহারা আরও উত্তম দেশের, অর্থাৎ স্বর্গীয় দেশের, আকাঙ্ক্ষা করিতেছেন। এই জন্য ঈশ্বর তাঁহাদের ঈশ্বর বলিয়া আখ্যাত হইতে, তাঁহাদের বিষয়ে লজ্জিত নহেন; কারণ তিনি তাঁহাদের নিমিত্ত এক নগর প্রস্তুত করিয়াছেন।
17বিশ্বাসে অব্রাহাম পরীক্ষিত হইয়া ইস্হাককে উৎসর্গ করিয়াছিলেন; এমন কি, যিনি প্রতিজ্ঞা সকল সানন্দে গ্রহণ করিয়াছিলেন, তিনি আপনার সেই একজাত পুত্রকে উৎসর্গ করিতেছিলেন, 18যাঁহার বিষয়ে তাঁহাকে বলা হইয়াছিল, “ইস্হাকে তোমার বংশ আখ্যাত হইবে”;#11:18 আদি 22 অধ্যায়। 21:12। 19তিনি মনে স্থির করিয়াছিলেন, ঈশ্বর মৃতগণের মধ্য হইতেও উত্থাপন করিতে সমর্থ; আবার তিনি তথা হইতে দৃষ্টান্তরূপে তাঁহাকে ফিরিয়া পাইলেন।
20বিশ্বাসে ইস্হাক আগামী বিষয়ের উদ্দেশেও যাকোবকে ও এষৌকে আশীর্ব্বাদ করিলেন। 21বিশ্বাসে যাকোব মৃত্যুকালে যোষেফের উভয় পুত্রকে আশীর্ব্বাদ করিলেন, এবং আপন যষ্টির অগ্রভাগে নির্ভর করিয়া ভজনা করিলেন।#আদি 27:27,39।; 47:31।; 48:15,16।
22বিশ্বাসে যোষেফ মৃত্যুকালে ইস্রায়েল-সন্তানগণের প্রস্থানের বিষয়ে উল্লেখ করিলেন, এবং আপন অস্থিসমূহের বিষয়ে আদেশ দিলেন।#আদি 50:24।
23বিশ্বাসে, মোশি জন্মিলে পর, তিন মাস পর্য্যন্ত পিতামাতা কর্ত্তৃক গোপনে রক্ষিত হইলেন, কেননা তাঁহারা দেখিলেন, শিশুটী সুন্দর; আর রাজার আজ্ঞাতে ভীত হইলেন না। 24বিশ্বাসে মোশি বয়ঃপ্রাপ্ত হইলে পর ফরৌণের কন্যার পুত্র বলিয়া আখ্যাত হইতে অস্বীকার করিলেন;#যাত্রা 2:2,10-15। 25তিনি পাপজাত ক্ষণিক সুখভোগ অপেক্ষা বরং ঈশ্বরের প্রজাবৃন্দের সঙ্গে দুঃখভোগ মনোনীত করিলেন; 26তিনি মিসরের সমস্ত ধন অপেক্ষা খ্রীষ্টের দুর্নাম মহাধন জ্ঞান করিলেন, কেননা, তিনি পুরস্কারদানের প্রতি দৃষ্টি রাখিতেন।
27বিশ্বাসে তিনি মিসর ত্যাগ করিলেন, রাজার কোপ হইতে ভীত হন নাই, কারণ যিনি অদৃশ্য, তাঁহাকে যেন দেখিয়াই স্থির থাকিলেন। 28বিশ্বাসে তিনি নিস্তারপর্ব্ব ও রক্তের প্রোক্ষণ স্থাপন করিলেন, যেন প্রথমজাতদের সংহারকর্ত্তা তাহাদিগকে স্পর্শ না করেন।#যাত্রা 12:12,13।
29বিশ্বাসে লোকেরা শুষ্ক ভূমির ন্যায় লোহিত সমুদ্রের মধ্য দিয়া গমন করিল, কিন্তু মিস্রীয়গণ সেই চেষ্টা করিতে গিয়া কবলিত হইল।#যাত্রা 14:22,27।
30বিশ্বাসে যিরীহোর প্রাচীর, সাত দিন প্রদক্ষিণ করা হইলে পর, পড়িয়া গেল। 31বিশ্বাসে রাহব বেশ্যা, শান্তির সহিত চরদিগের অভ্যর্থনা করাতে, অবাধ্যদের সহিত বিনষ্ট হইল না।#যিহোশূয় 6:20।; 2:11,12।; 6:17,23।
32আর অধিক কি বলিব? গিদিয়োন, বারক, শিম্শোন, যিপ্তহ, এবং দায়ূদ ও শমূয়েল ও ভাববাদিগণ, এই সকলের বৃত্তান্ত বলিতে গেলে সময়ের অকুলান হইবে। 33বিশ্বাস দ্বারা ইহাঁরা নানা রাজ্য পরাজয় করিলেন, ধার্ম্মিকতার অনুষ্ঠান করিলেন, নানা প্রতিজ্ঞার ফল প্রাপ্ত হইলেন, সিংহদের মুখ বদ্ধ করিলেন, 34অগ্নির তেজ নির্ব্বাণ করিলেন, খড়্গের মুখ এড়াইলেন, দুর্ব্বলতা হইতে বলপ্রাপ্ত হইলেন, যুদ্ধে বিক্রান্ত হইলেন, অন্যজাতীয়দের সৈন্যশ্রেণী তাড়াইয়া দিলেন। 35নারীগণ আপন আপন মৃত লোককে পুনরুত্থান দ্বারা পুনঃপ্রাপ্ত হইলেন; অন্যেরা প্রহার দ্বারা নিহত হইলেন, মুক্তি গ্রহণ করেন নাই, যেন শ্রেষ্ঠ পুনরুত্থানের ভাগী হইতে পারেন। 36আর অন্যেরা বিদ্রূপের ও কশাঘাতের, অধিকন্তু বন্ধনের ও কারাগারের পরীক্ষা ভোগ করিলেন; 37তাঁহারা প্রস্তরাঘাতে হত, পরীক্ষিত, করাত দ্বারা বিদীর্ণ, খড়্গ দ্বারা নিহত হইলেন; তাঁহারা মেষের ও ছাগের চর্ম্ম পরিয়া বেড়াইতেন, দীনহীন, ক্লীষ্ট, উপদ্রুত হইতেন; 38এই জগৎ যাঁহাদের যোগ্য ছিল না, তাঁহারা প্রান্তরে প্রান্তরে, পাহাড়ে পাহাড়ে, গুহায় গুহায় ও পৃথিবীর গহ্বরে গহ্বরে ভ্রমণ করিতেন।
39আর বিশ্বাস প্রযুক্ত ইহাঁদের সকলের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া হইয়াছিল, কিন্তু ইহাঁরা প্রতিজ্ঞার ফল প্রাপ্ত হন নাই; 40কেননা ঈশ্বর আমাদের নিমিত্ত পূর্ব্বাবধি কোন শ্রেষ্ঠ বিষয় লক্ষ্য করিয়াছিলেন, যেন তাঁহারা আমাদের ব্যতিরেকে সিদ্ধি না পান।
Currently Selected:
ইব্রীয়। 11: BENGALI-BSI
Highlight
Share
Copy
Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Bengali O.V. Bible, পবিএ বাইবেল O.V.
Copyright © 2016 by The Bible Society of India
Used by permission. All rights reserved worldwide.