YouVersion Logo
Search Icon

যাত্রাপুস্তক 8

8
দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ আঘাত।
1নদীতে সদাপ্রভুর আঘাত করিবার পর সাত দিন গত হইল। পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, তুমি ফরৌণের নিকটে যাও, তাহাকে বল, সদাপ্রভু এই কথা কহেন, আমার সেবা করণার্থে আমার প্রজাদিগকে ছাড়িয়া দেও। 2যদি ছাড়িয়া দিতে অসম্মত হও, তবে দেখ, আমি ভেক দ্বারা তোমার সমস্ত প্রদেশকে আঘাত করিব। 3নদী ভেকে পরিপূর্ণ হইবে; সে সকল ভেক উঠিয়া তোমার গৃহে, শয়নাগারে ও শয্যায়, এবং তোমার দাসগণের গৃহে, তোমার প্রজাদের মধ্যে, তোমার তুন্দুরে ও তোমার আটা ছানিবার কাঠুয়াতে প্রবেশ করিবে; 4আর তোমার, তোমার প্রজাদের ও দাসগণের অঙ্গে ভেক উঠিবে।
5পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, হারোণকে বল, তুমি নদী, খাল ও বিল সকলের উপরে যষ্টিসহ হস্ত বিস্তার করিয়া মিসর দেশের উপরে ভেক আনাও। 6তাহাতে হারোণ মিসরের সকল জলের উপরে আপন হস্ত বিস্তার করিলে ভেকেরা উঠিয়া মিসর দেশ ব্যাপিল। 7আর মন্ত্রবেত্তারাও মায়াবলে সেইরূপ করিয়া মিসর দেশের উপরে ভেক আনিল।
8পরে ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডাকাইয়া কহিলেন, সদাপ্রভুর কাছে বিনতি কর, যেন তিনি আমা হইতে ও আমার প্রজাদিগের হইতে এই সকল ভেক দূর করিয়া দেন, তাহাতে আমি লোকদিগকে ছাড়িয়া দিব, যেন তাহারা সদাপ্রভুর উদ্দেশে যজ্ঞ করিতে পারে।
9তখন মোশি ফরৌণকে কহিলেন, আমার উপরে দর্প করিয়া বলুন; ভেক সকল যেন আপনা হইতে ও আপনার গৃহ সকল হইতে উচ্ছিন্ন হয়, কেবল নদীতে থাকে, আপনার ও আপনার দাসগণের ও প্রজা সকলের নিমিত্তে কোন্ সময়ের জন্য এমন বিনতি করিব? তিনি কহিলেন, কল্যকার জন্য।
10তখন মোশি কহিলেন, আপনার বাক্যানুসারেই হউক, যেন আপনি জানিতে পারেন যে, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর তুল্য কেহ নাই; 11ভেকেরা আপনা হইতে ও আপনার গৃহ, দাস ও প্রজা সকল হইতে দূর হইয়া কেবল নদীতেই থাকিবে। 12পরে মোশি ও হারোণ ফরৌণের নিকট হইতে বাহিরে গেলেন, এবং মোশি ফরৌণের বিরুদ্ধে যে সকল ভেক আনিয়াছিলেন, সেই সকলের বিষয়ে সদাপ্রভুর কাছে ক্রন্দন করিলেন। 13আর সদাপ্রভু মোশির বাক্যানুসারে করিলেন, তাহাতে গৃহে, প্রাঙ্গণে ও ক্ষেত্রে সকল ভেক মরিল। 14তখন লোকেরা সে সকল একত্র করিয়া ঢিবি করিলে দেশে দুর্গন্ধ হইল। 15কিন্তু ফরৌণ যখন দেখিলেন, নিবৃত্তি হইল, তখন আপন হৃদয় ভারী করিলেন, তাঁহাদের বাক্যে মনোযোগ করিলেন না; যেমন সদাপ্রভু বলিয়াছিলেন।
16পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, হারোণকে বল, তুমি আপন যষ্টি বিস্তার করিয়া ভূমির ধূলিতে প্রহার কর, তাহাতে সমুদয় মিসর দেশে পিশু হইবে। 17তখন তাঁহারা সেইরূপ করিলেন; হারোণ আপন যষ্টিসহ হস্ত বিস্তার করিয়া ভূমির ধূলিতে প্রহার করিলেন, তাহাতে মনুষ্যে ও পশুতে পিশু হইল, মিসর দেশের সর্ব্বত্র ভূমির সকল ধূলি পিশু হইয়া গেল। 18তখন মন্ত্রবেত্তারা আপনাদের মায়াবলে পিশু উৎপন্ন করিবার জন্য সেইরূপ করিল বটে, কিন্তু পারিল না, আর মনুষ্যে ও পশুতে পিশু হইল। 19তখন মন্ত্রবেত্তারা ফরৌণকে কহিল, এ ঈশ্বরের অঙ্গুলি। তথাপি ফরৌণের হৃদয় কঠিন হইল, তিনি তাঁহাদের কথায় মনোযোগ করিলেন না; যেমন সদাপ্রভু বলিয়াছিলেন। 20আর সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, তুমি প্রত্যূষে উঠিয়া গিয়া ফরৌণের সম্মুখে দাঁড়াও; দেখ, সে জলের কাছে আসিবে; তুমি তাহাকে এই কথা বল, সদাপ্রভু এই কথা কহেন, আমার সেবা করণার্থে আমার প্রজাদিগকে ছাড়িয়া দেও। 21যদি আমার প্রজাদিগকে ছাড়িয়া না দেও, তবে দেখ, আমি তোমাতে, তোমার দাসগণে, প্রজাদিগেতে ও গৃহ সকলে দংশকের ঝাঁক প্রেরণ করিব; মিস্রীয়দের গৃহ সকল, এমন কি, তাহাদের বাসভূমিও দংশকে পরিপূর্ণ হইবে। 22কিন্তু আমি সেই দিন আমার প্রজাদের নিবাসস্থান গোশন প্রদেশ ভিন্ন করিব; সে স্থানে দংশক হইবে না; যেন তুমি জানিতে পার যে, পৃথিবীর মধ্যে আমিই সদাপ্রভু। 23আমি আমার প্রজাদের ও তোমার প্রজাদের মধ্যে প্রভেদ করিব; কল্য এই চিহ্ন হইবে। 24পরে সদাপ্রভু সেইরূপ করিলেন, ফরৌণের ও তাঁহার দাসগণের গৃহে দংশকের বৃহৎ ঝাঁক উপস্থিত হইল; তাহাতে সমস্ত মিসর দেশে দংশকের ঝাঁক হেতু দেশ উৎসন্ন হইল।
25তখন ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডাকাইয়া কহিলেন, তোমরা যাও, দেশের মধ্যে তোমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশে যজ্ঞ কর।
26মোশি কহিলেন, তাহা করা উপযুক্ত নয়, কেননা আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে মিস্রীয়দের ঘৃণাজনক বলিদান করিতে হইবে; দেখুন, মিস্রীয়দের সাক্ষাতে তাহাদের ঘৃণাজনক বলিদান করিলে তাহারা কি আমাদিগকে প্রস্তরাঘাতে বধ করিবে না? 27আমরা তিন দিনের পথ প্রান্তরে গিয়া, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে আজ্ঞা দিবেন, তদনুসারে তাঁহার উদ্দেশে যজ্ঞ করিব।
28ফরৌণ কহিলেন, আমি তোমাদিগকে ছাড়িয়া দিতেছি; তোমরা প্রান্তরে গিয়া আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে যজ্ঞ কর; কিন্তু বহুদূর যাইও না; তোমরা আমার জন্য বিনতি কর।
29তখন মোশি কহিলেন, দেখুন, আমি আপনার নিকট হইতে গিয়া সদাপ্রভুর কাছে বিনতি করিব, তাহাতে ফরৌণের, তাঁহার দাসগণের ও তাঁহার প্রজাদের নিকট হইতে কল্য দংশকের ঝাঁক সকল দূরে যাইবে; কিন্তু সদাপ্রভুর উদ্দেশে যজ্ঞ করণার্থে লোকদিগকে ছাড়িয়া দিবার বিষয়ে ফরৌণ পুনর্ব্বার প্রবঞ্চনা না করুন।
30পরে মোশি ফরৌণের নিকট হইতে বাহিরে গিয়া সদাপ্রভুর কাছে বিনতি করিলেন। 31আর সদাপ্রভু মোশির বাক্যানুসারে করিলেন; ফরৌণ, তাঁহার দাসগণ ও প্রজা সকল হইতে দংশকের সমস্ত ঝাঁক দূর করিলেন; একটীও অবশিষ্ট রহিল না। 32আর এবারও ফরৌণ আপন হৃদয় ভারী করিলেন, লোকদিগকে ছাড়িয়া দিলেন না।

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in