দ্বিতীয় বিবরণ ১১

১১
1 অতএব তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম করিবে, এবং তাঁহার রক্ষণীয়, তাঁহার বিধি, তাঁহার শাসন ও তাঁহার আজ্ঞা সকল নিত্য নিত্য পালন করিবে। 2 আর অদ্য জ্ঞাত হও, যেহেতু তোমাদের বালকগণকে বলিতেছি না; তাহারা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কৃত শাস্তি জানে নাই ও দেখে নাই; তাঁহার মহত্ত, তাঁহার বলবান হস্ত, বিস্তারিত বাহু, 3 এবং তাঁহার চিহ্ন সকল ও মিসরের মধ্যে মিসর-রাজ ফরৌণের প্রতি ও তাঁহার সমস্ত দেশের প্রতি তিনি যাহা যাহা করিলেন, তাঁহার সেই সকল কার্য; 4 এবং মিসরীয় সৈন্যের, অশ্বের ও রথের প্রতি তিনি যাহা করিলেন, তাহারা যখন তোমাদের পশ্চাতে ধাবিত হইল, তিনি যেরূপে সূফসাগরের জল তাহাদের উপরে বহাইলেন, এবং সদাপ্রভু তাহাদিগকে বিনষ্ট করিলেন, অদ্য তাহারা নাই; 5 এবং এই স্থানে তোমাদের আগমন পর্যন্ত তোমাদের প্রতি তিনি প্রান্তরে যাহা যাহা করিয়াছেন; 6 আর তিনি রূবেণের পুত্র ইলীয়াবের সন্তান দাথন ও অবীরামের প্রতি যাহা যাহা করিয়াছেন, ফলতঃ পৃথিবী যেরূপে আপন মুখ বিস্তার করিয়া সমস্ত ইস্রায়েলের মধ্যে তাহাদিগকে, তাহাদের পরিজনগণকে, তাহাদের তাম্বু ও তাহাদের অধিকৃত সমস্ত সম্পত্তি গ্রাস করিল, এই সকল তাহারা দেখে নাই; 7 কিন্তু সদাপ্রভুর কৃত সমস্ত মহৎ কর্ম তোমরা স্বচক্ষে দেখিয়াছ। 8 অতএব অদ্য আমি তোমাদিগকে যে সকল আজ্ঞা দিতেছি, সেই সমস্ত আজ্ঞা পালন করিও, যেন তোমরা বলবান হও, এবং যে দেশ অধিকার করিবার জন্য পার হইয়া যাইতেছ, সেই দেশে প্রবেশ করিয়া তাহা অধিকার কর; 9 আর যেন সদাপ্রভু তোমাদের পিতৃপুরুষদিগকে ও তাঁহাদের বংশকে যে দেশ দিতে দিব্য করিয়াছিলেন, সেই দুগ্ধমধুপ্রবাহী দেশে তোমাদের দীর্ঘকাল অবস্থিতি হয়। 10 কারণ তোমরা যে মিসর দেশ হইতে বাহির হইয়া আসিয়াছ, সেই দেশে তুমি বীজ বুনিয়া শাকের উদ্যানের ন্যায় পদ দ্বারা জল সেচন করিতে; কিন্তু তুমি যে দেশ অধিকার করিতে যাইতেছ, তাহা তদ্রূপ নয়। 11 তোমরা যে দেশ অধিকার করিতে পার হইয়া যাইতেছ, সেটি পর্বত ও উপত্যকা-বিশিষ্ট দেশ, এবং আকাশের বৃষ্টির জল পান করে; 12 সেই দেশের প্রতি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর মনোযোগ আছে; বৎসরের আরম্ভ অবধি বৎসরের শেষ পর্যন্ত তাহার প্রতি নিরন্তর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দৃষ্টি থাকে।
13 আর আমি অদ্য তোমাদিগকে যে সকল আজ্ঞা দিতেছি, তোমরা যদি যত্নপূর্বক তাহা শুনিয়া তোমাদের সমস্ত হৃদয় ও সমস্ত প্রাণের সহিত তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম ও তাঁহার সেবা কর, 14 তবে আমি যথাসময়ে অর্থাৎ প্রথম ও শেষ বর্ষায় তোমাদের দেশে বৃষ্টি দান করিব, তাহাতে তুমি আপন শস্য, দ্রাক্ষারস ও তৈল সংগ্রহ করিতে পারিবে। 15 আর আমি তোমার পশুগণের জন্য তোমার ক্ষেত্রে তৃণ দিব, এবং তুমি ভক্ষণ করিয়া তৃপ্ত হইবে। 16 আপনাদের বিষয়ে সাবধান, পাছে তোমাদের হৃদয় ভ্রান্ত হয়, এবং তোমরা পথ ছাড়িয়া অন্য দেবগণের সেবা কর ও তাহাদের নিকটে প্রণিপাত কর; 17 করিলে তোমাদের প্রতি সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রজ্বলিত হইবে ও তিনি আকাশ রুদ্ধ করিবেন, তাহাতে বৃষ্টি হইবে না, ও ভূমি নিজ ফল প্রদান করিবে না, এবং সদাপ্রভু তোমাদিগকে যে দেশ দিতেছেন, সেই উত্তম দেশ হইতে তোমরা ত্বরায় উচ্ছিন্ন হইবে।
18 অতএব তোমরা আমার এই সকল বাক্য আপন আপন হৃদয়ে ও প্রাণে রাখিও, এবং চিহ্নরূপে আপন আপন হস্তে বাঁধিয়া রাখিও, এবং সেই সকল ভূষণরূপে তোমাদের দুই চক্ষুর মধ্যে থাকিবে। 19 আর তোমরা গৃহে উপবেশন ও পথে গমন কালে এবং শয়ন ও গাত্রোত্থান কালে ঐ সকল কথার প্রসঙ্গ করিয়া আপন আপন সন্তানদিগকে শিক্ষা দিও। 20 আর তুমি আপন গৃহ-দ্বারের পার্শ্বকাষ্ঠে ও আপন দ্বারে তাহা লিখিয়া রাখিও। 21 তাহাতে সদাপ্রভু তোমাদের পিতৃপুরুষদিগকে যে ভূমি দিতে দিব্য করিয়াছেন, সেই ভূমিতে তোমাদের আয়ু ও তোমাদের সন্তানদের আয়ু ভূমণ্ডলের উপরে আকাশমণ্ডলের আয়ুর ন্যায় বৃদ্ধি পাইবে।
22 এই যে সমস্ত আজ্ঞা আমি তোমাদিগকে দিতেছি, তোমরা যদি যত্নপূর্বক তাহা পালন করিয়া তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম কর, তাঁহার সমস্ত পথে চল, ও তাঁহাতে আসক্ত থাক; 23 তবে সদাপ্রভু তোমাদের সম্মুখ হইতে এই সমস্ত জাতিকে অধিকারচ্যুত করিবেন; এবং তোমরা আপন হইতে বৃহৎ ও বলবান জাতিদের উত্তরাধিকারী হইবে। 24 তোমাদের পা যে যে স্থানে পড়িবে, সেই সেই স্থান তোমাদের হইবে; প্রান্তর ও লিবানোন অবধি, নদী অর্থাৎ ফরাৎ নদী অবধি পশ্চিম সমুদ্র পর্যন্ত তোমাদের সীমা হইবে। 25 তোমাদের সম্মুখে কেহই দাঁড়াইতে পারিবে না; তোমরা যে দেশে পাদবিক্ষেপ করিবে, সেই দেশের সর্বত্র তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আপন বাক্যানুসারে তোমাদের হইতে লোকদের ভয় ও ত্রাস উপস্থিত করিবেন।
26 দেখ, অদ্য আমি তোমাদের সম্মুখে আশীর্বাদ ও অভিশাপ রাখিলাম। 27 অদ্য আমি তোমাদিগকে যে সকল আজ্ঞা জানাইলাম, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেই সকল আজ্ঞাতে যদি কর্ণপাত কর, তবে আশীর্বাদ পাইবে। 28 আর যদি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞাতে কর্ণপাত না কর, এবং আমি অদ্য তোমাদিগকে যে পথের বিষয়ে আজ্ঞা করিলাম, যদি সেই পথ ছাড়িয়া তোমাদের অজ্ঞাত অন্য দেবগণের পশ্চাতে গমন কর, তবে অভিশাপগ্রস্ত হইবে।
29 আর তুমি যে দেশ অধিকার করিতে যাইতেছ, সেই দেশে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যখন তোমাকে প্রবেশ করাইবেন, তখন তুমি গরিষীম পর্বতে ঐ আশীর্বাদ, এবং এবল পর্বতে ঐ অভিশাপ স্থাপন করিবে। 30 সেই দুই পর্বত যর্দনের ওপারে, সূর্যাস্তপথের ওদিকে, অরাবা তলভূমি নিবাসী কনানীয়দের দেশে, গিল্‌গলের সম্মুখে, মোরির এলোন বনের নিকটে কি নয়? 31 কেননা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদিগকে যে দেশ দিতেছেন, সেই দেশ অধিকার করণার্থে তোমরা তথায় প্রবেশ করিবার জন্য যর্দন পার হইয়া যাইবে, দেশ অধিকার করিবে ও সেখানে বাস করিবে। 32 আর আমি অদ্য তোমাদের সম্মুখে যে সকল বিধি ও শাসন রাখিলাম সেই সকল যত্নপূর্বক পালন করিবে।

Markierung

Teilen

Kopieren

None

Möchtest du deine gespeicherten Markierungen auf allen deinen Geräten sehen? Erstelle ein kostenloses Konto oder melde dich an.