YouVersion Logo
Search Icon

মার্ক ৯

1 আর তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যাহারা এখানে দাঁড়াইয়া রহিয়াছে, তাহাদের মধ্যে কয়েক জন আছে, যাহারা কোন মতে মৃত্যুর আস্বাদ পাইবে না, যে পর্যন্ত ঈশ্বরের রাজ্য পরাক্রমের সহিত আসিতে না দেখে।
যীশুর রূপান্তর
2 ছয় দিন #মথি ১৭:১-১৩; লূক ৯:২৮-৩৬ পরে যীশু কেবল পিতর, যাকোব ও যোহনকে সঙ্গে করিয়া বিরলে এক উচ্চ পর্বতে লইয়া গেলেন, আর তিনি তাঁহাদের সাক্ষাতে রূপান্তরিত হইলেন। 3 আর তাঁহার বস্ত্র উজ্জ্বল, এবং অতিশয় শুভ্রবর্ণ হইল, পৃথিবীস্থ কোন রজক সেইরূপ শুভ্রবর্ণ করিতে পারে না। 4 আর এলিয় ও মোশি তাঁহাদিগকে দেখা দিলেন; তাঁহারা যীশুর সহিত কথোপকথন করিতে লাগিলেন। 5 তখন পিতর যীশুকে কহিলেন, রব্বি, এখানে আমাদের থাকা ভাল; আমরা তিনটি কুটির নির্মাণ করি, একটি আপনার জন্য, একটি মোশির জন্য এবং একটি এলিয়ের জন্য। 6 কারণ কি বলিতে হইবে, তাহা তিনি বুঝিলেন না, কেননা তাঁহারা অত্যন্ত ভীত হইয়াছিলেন। 7 পরে একখানি মেঘ উপস্থিত হইয়া তাঁহাদিগকে ছায়া করিল; আর সেই মেঘ হইতে এই বাণী হইল, ‘ইনি আমার প্রিয় পুত্র, ইঁহার কথা শুন।’ 8 পরে হঠাৎ তাঁহারা চারিদিকে দৃষ্টি করিয়া আর কাহাকেও দেখিতে পাইলেন না, দেখিলেন, কেবল একা যীশু তাঁহাদের সঙ্গে রহিয়াছেন।
9 পর্বত হইতে নামিবার সময়ে তিনি তাঁহাদিগকে দৃঢ় আজ্ঞা দিয়া কহিলেন, তোমরা যাহা যাহা দেখিলে, তাহা কাহাকেও বলিও না, যাবৎ মৃতগণের মধ্য হইতে মনুষ্যপুত্রের উত্থান না হয়। 10 তখন, মৃতগণের মধ্য হইতে উত্থান কি, তাঁহারা এই বিষয় পরস্পর জিজ্ঞাসাবাদ করতঃ সেই কথা আপনাদের মধ্যে রাখিয়া দিলেন। 11 পরে তাঁহারা তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, বলিলেন, অধ্যাপকেরা ত বলেন, প্রথমে এলিয়কে আসিতে হইবে। 12 তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, এলিয় প্রথমে আসিয়া সকল বিষয়ের সুধারা পুনঃস্থাপন করিবেন বটে; আর মনুষ্যপুত্রের বিষয়ে কিরূপেই বা লেখা রহিয়াছে #যিশা ৫৩ যে, তাঁহাকে অনেক দুঃখ পাইতে ও অবজ্ঞাত হইতে হইবে? 13 কিন্তু আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, এলিয়ের বিষয়ে যেরূপ লেখা আছে, তদনুসারে তিনি আসিয়া গিয়াছেন, এবং লোকেরা তাঁহার প্রতি যাহা ইচ্ছা তাহাই করিয়াছে। #মালাখি ৪:৫
যীশুর বিবিধ কর্ম ও শিক্ষা
যীশু একজন ভূতগ্রস্ত বালককে সুস্থ করেন #মথি ১৭:১৪-২১; লূক ৯:৩৭-৪০
14 পরে তাঁহারা শিষ্যগণের নিকটে আসিয়া দেখিলেন, তাঁহাদের চারিদিকে অনেক লোক, আর অধ্যাপকেরা তাঁহাদের সহিত বাদানুবাদ করিতেছে। 15 তাঁহাকে দেখিবামাত্র সমস্ত লোক অতিশয় চমৎকৃত হইল, ও তাঁহার নিকটে দৌড়াইয়া গিয়া তাঁহাকে মঙ্গলবাদ করিল। 16 তিনি তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, ইহাদের সঙ্গে তোমরা কোন্‌ বিষয়ে বাদানুবাদ করিতেছ? 17 তাহাতে লোকদের মধ্যে একজন উত্তর করিল, হে গুরু, আমার পুত্রটিকে আপনার কাছে আনিয়াছিলাম, তাহাকে বোবা আত্মায় পাইয়াছে; 18 আর সেটি তাহাকে যেখানে ধরে, সেখানে আছাড় মারে, আর তাহার মুখে ফেনা উঠে, এবং সে দাঁত কিড়মিড় করে, আর শক্ত হইয়া যায়; আমি আপনার শিষ্যদিগকে তাহা ছাড়াইতে বলিলাম, কিন্তু তাঁহারা পারিলেন না। 19 তিনি উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, হে অবিশ্বাসী বংশ, আমি কত কাল তোমাদের নিকটে থাকিব? কত কাল তোমাদের প্রতি সহিষ্ণুতা করিব? উহাকে আমার নিকটে আন। 20 তাহারা তাহাকে তাঁহার নিকটে আনিল; তাঁহাকে দেখিবামাত্র সেই আত্মা তাহাকে অতিশয় মুচড়াইয়া ধরিল, আর সে ভূমিতে পড়িয়া ফেনা ভাঙ্গিয়া গড়াগড়ি দিতে লাগিল। 21 তখন তিনি তাহার পিতাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, ইহার কতদিন এমন হইয়াছে? সে কহিল, ছেলে বেলা হইতে; 22 আর সেই আত্মা ইহাকে বিনাশ করিবার নিমিত্ত অনেক বার আগুনে ও অনেক বার জলে ফেলিয়া দিয়াছে; কিন্তু আপনি যদি কিছু করিতে পারেন, তবে আমাদের প্রতি দয়া করিয়া উপকার করুন। 23 যীশু তাহাকে কহিলেন, যদি পারেন! যে বিশ্বাস করে, তাহার পক্ষে সকলই সাধ্য। 24 অমনি সেই বালকের পিতা চেঁচাইয়া অশ্রুপাতপূর্বক বলিয়া উঠিল, বিশ্বাস করিতেছি, আমার অবিশ্বাসের প্রতীকার করুন। 25 পরে লোকেরা এক সঙ্গে দৌড়াইয়া আসিতেছে দেখিয়া যীশু সেই অশুচি আত্মাকে ধমকাইয়া কহিলেন, হে বধির গোঁগা আত্মা, আমিই তোমাকে আজ্ঞা দিতেছি, ইহা হইতে বাহির হও, আর কখনও ইহার মধ্যে প্রবেশ করিও না। 26 তখন সে চেঁচাইয়া তাহাকে অতিশয় মুচড়াইয়া দিয়া বাহির হইয়া গেল; তাহাতে বালকটি মরার মতন হইয়া পড়িল; এমন কি অধিকাংশ লোক বলিল, সে মরিয়া গিয়াছে। 27 কিন্তু যীশু তাহার হাত ধরিয়া তাহাকে তুলিলে সে উঠিল। 28 পরে তিনি গৃহে আসিলে তাঁহার শিষ্যেরা বিজনে তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, আমরা কেন সেটা ছাড়াইতে পারিলাম না? 29 তিনি কহিলেন, প্রার্থনা ভিন্ন আর কিছুতেই এই জাতি বাহির হয় না।
যীশু দ্বিতীয় বার আপন মৃত্যুর বিষয়ে বলেন
30 সেই স্থান হইতে প্রস্থান করিয়া তাঁহারা গালীলের মধ্য দিয়া গমন করিলেন, আর তাঁহার ইচ্ছা ছিল না যে, কেহ তাহা জানিতে পায়। 31 কেননা তিনি আপন শিষ্যদিগকে উপদেশ দিয়া বলিতেন, মনুষ্যপুত্র মনুষ্যদের হস্তে সমর্পিত হইবেন; তাহারা তাঁহাকে বধ করিবে; হত হইলে পর তিনি তিন দিন পরে উঠিবেন। 32 কিন্তু তাঁহারা সেই কথা বুঝিলেন না, এবং তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিতেও ভয় করিলেন।
প্রকৃতভাবে শ্রেষ্ঠ কে, এবং ধর্ম-পথে বিঘ্ন দানের ফল কি, এই বিষয়ে শিক্ষা
33 পরে #মথি ১৮:১-৫; লূক ৯:৪৬-৫০ তাঁহারা কফরণাহূমে আসিলেন, আর গৃহমধ্যে উপস্থিত হইলে তিনি তাঁহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, পথে তোমরা কোন্‌ বিষয়ে তর্কবিতর্ক করিতেছিলে? 34 তাঁহারা চুপ করিয়া রহিলেন, কারণ কে শ্রেষ্ঠ, পথে পরস্পর এই বিষয়ে বাদানুবাদ করিয়াছিলেন। 35 তখন তিনি বসিয়া সেই বারো জনকে ডাকিয়া কহিলেন, কেহ যদি প্রথম হইতে ইচ্ছা করে, তবে সে সকলের শেষে থাকিবে ও সকলের পরিচারক হইবে। 36 পরে তিনি একটি শিশুকে লইয়া তাঁহাদের মধ্যে দাঁড় করাইয়া দিলেন এবং তাহাকে কোলে করিয়া তাঁহাদিগকে কহিলেন, 37 যে কেহ আমার নামে ইহার মত কোন শিশুকে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে, আর যে কেহ আমাকে গ্রহণ করে, সে আমাকে নয়, কিন্তু যিনি আমাকে প্রেরণ করিয়াছেন, তাঁহাকেই গ্রহণ করে।
38 যোহন তাঁহাকে কহিলেন, হে গুরু, আমরা এক ব্যক্তিকে আপনার নামে ভূত ছাড়াইতে দেখিয়াছিলাম, আর তাহাকে বারণ করিতেছিলাম, কারণ সে আমাদের পশ্চাদ্‌গমন করে না। 39 কিন্তু যীশু কহিলেন, তাহাকে বারণ করিও না কারণ এমন কেহ নাই, যে আমার নামে পরাক্রম-কার্য করিয়া সহজে আমার নিন্দা করিতে পারে। 40 কারণ যে কেহ আমাদের বিপক্ষ নয়, সে আমাদের সপক্ষ। 41 বাস্তবিক যে কেহ তোমাদিগকে খ্রীষ্টের লোক বলিয়া এক বাটি জল পান করিতে দেয়, আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, সে কোন মতে আপন পুরস্কার হইতে বঞ্চিত হইবে না। 42 আর এই যে ক্ষুদ্রগণ আমাতে বিশ্বাস করে, যে কেহ তাহাদের একজনের বিঘ্ন জন্মায়, বরং তাহার গলায় বৃহৎ যাঁতা বাঁধিয়া তাহাকে সমুদ্রে ফেলিয়া দিলেও তাহার পক্ষে ভাল। 43 আর তোমার হস্ত যদি তোমার বিঘ্ন জন্মায়, তবে তাহা কাটিয়া ফেল; 44 দুই হস্ত লইয়া নরকে, সেই অনির্বাণ অগ্নিতে, যাওয়া অপেক্ষা, বরং নুলা হইয়া জীবনে প্রবেশ করা তোমার ভাল। 45 আর তোমার চরণ যদি তোমার বিঘ্ন জন্মায়, তবে তাহা কাটিয়া ফেল; দুই চরণ লইয়া নরকে নিক্ষিপ্ত হওয়া অপেক্ষা বরং খোঁড়া হইয়া জীবনে প্রবেশ করা তোমার ভাল। 46 আর তোমার চক্ষু যদি তোমার বিঘ্ন জন্মায়, তবে তাহা উৎপাটন করিয়া ফেল; 47 দুই চক্ষু লইয়া নরকে নিক্ষিপ্ত হওয়া অপেক্ষা বরং একচক্ষু হইয়া ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা তোমার ভাল; 48 নরকে ত লোকদের কীট মরে না, এবং অগ্নি নির্বাণ হয় না। 49 বস্তুতঃ প্রত্যেক ব্যক্তিকে অগ্নিরূপ লবণে লবণাক্ত করা যাইবে, এবং প্রত্যেক বলিকে লবণে লবণাক্ত করা যাইবে। 50 লবণ ভাল, কিন্তু লবণ যদি লবণত্ব হারায়, তবে তোমরা কিসে তাহা আস্বাদযুক্ত করিবে? তোমরা আপন আপন অন্তরে লবণ রাখ, এবং পরস্পর শান্তিতে থাক।

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in