মার্ক ১৪
১৪
যীশুর শেষ দুঃখভোগ ও মৃত্যু
1 দুই দিন পরে #মথি ২৬; লূক ২২; ১ করি ১১:২৩-২৫ নিস্তারপর্ব ও তাড়ীশুন্য রুটির পর্ব; এমন সময়ে প্রধান যাজকগণ ও অধ্যাপকেরা, কিরূপে তাঁহাকে কৌশলে ধরিয়া বধ করিতে পারে, তাহারই চেষ্টা করিতেছিল। 2 কেননা তাহারা বলিল, পর্বের সময়ে নয়, পাছে লোকদের মধ্যে গণ্ডগোল হয়।
যীশুর অভিষেক
3 যীশু যখন বৈথনিয়াতে কুষ্ঠরোগী শিমোনের বাটীতে ছিলেন, তখন তিনি ভোজনে বসিলে একজন স্ত্রীলোক শ্বেত প্রস্তরের পাত্রে বহুমূল্য আসল জটামাংসীর তৈল লইয়া আসিল; সে পাত্রটি ভাঙ্গিয়া তাঁহার মস্তকে তৈল ঢালিয়া দিল। 4 কিন্তু উপস্থিত কোন কোন ব্যক্তি বিরক্ত হইয়া পরস্পর কহিল, তৈলের এইরূপ অপব্যয় হইল কেন? 5 এই তৈল ত বিক্রয় করিলে তিনশত সিকিরও অধিক পাওয়া যাইত, এবং তাহা দরিদ্রদিগকে দিতে পারা যাইত। আর তাহারা সেই স্ত্রীলোকটির প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করিল। 6 কিন্তু যীশু কহিলেন, ইহাকে থাকিতে দেও, কেন ইহাকে দুঃখ দিতেছ? 7 এ আমার প্রতি সৎকার্য করিল। কেননা দরিদ্রেরা তোমাদের কাছে সর্বদাই আছে; তোমরা যখন ইচ্ছা কর, তাহাদের উপকার করিতে পার; কিন্তু আমাকে সর্বদা পাইবে না। 8 এ যাহা করিতে পারিত, তাহাই করিল; অগ্রে আসিয়া সমাধির উপলক্ষে আমার দেহে সুগন্ধি তৈল ঢালিয়া দিল। 9 আর আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, সমুদয় জগতে যে কোন স্থানে সুসমাচার প্রচারিত হইবে, সেই স্থানে ইহার স্মরণার্থে ইহার এই কর্মের কথাও বলা যাইবে।
10 পরে ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদা, সেই বারো জনের মধ্যে একজন, প্রধান যাজকদের নিকটে গেল, যেন তাহাদের হস্তে যীশুকে সমর্পণ করিতে পারে। 11 তাহারা শুনিয়া আনন্দিত হইল, এবং তাহাকে টাকা দিতে স্বীকার করিল; তখন সে কোন্ সুযোগে তাঁহাকে সমর্পণ করিবে, তাহারই চেষ্টা করিতে লাগিল।
নিস্তারপর্ব পালন ও প্রভুর ভোজ স্থাপন
12 তাড়ীশুন্য রুটির পর্বের প্রথম দিন, যে দিন নিস্তারপর্বের মেষশাবক বলিদান করা হইত, সেই দিন তাঁহার শিষ্যেরা তাঁহাকে বলিলেন, আমরা কোথায় গিয়া আপনার জন্য নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তুত করিব? আপনার ইচ্ছা কি? 13 তখন তিনি আপন শিষ্যদের মধ্যে দুই জনকে পাঠাইয়া দিলেন, বলিলেন, তোমরা নগরে যাও, এমন এক ব্যক্তি তোমাদের সম্মুখে পড়িবে, যে এক কলশী জল লইয়া আসিতেছে; 14 তাহারই পশ্চাৎ পশ্চাৎ যাইও; আর সে যে বাটীতে প্রবেশ করে, সেই বাটীর কর্তাকে বলিও, গুরু বলিতেছেন, যেখানে আমি আমার শিষ্যগণের সহিত নিস্তারপর্বের ভোজ ভোজন করিতে পারি, আমার সেই অতিথিশালা কোথায়? 15 তাহাতে সেই ব্যক্তি তোমাদিগকে উপরের একটি সুসজ্জিত প্রশস্ত কুঠরি দেখাইয়া দিবে, সেই স্থানে আমাদের জন্য প্রস্তুত করিও। 16 পরে শিষ্যেরা প্রস্থান করিয়া নগরে গেলেন, আর তিনি যেরূপ বলিয়াছিলেন, সেইরূপ দেখিতে পাইলেন; পরে তাঁহারা নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তুত করিলেন।
17 পরে সন্ধ্যা হইলে তিনি সেই বারো জনের সহিত উপস্থিত হইলেন। 18 তাঁহারা বসিয়া ভোজন করিতেছেন, এমন সময়ে যীশু বলিলেন, আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, তোমাদের একজন আমাকে সমর্পণ করিবে, সে আমার সহিত ভোজন করিতেছে। 19 তখন তাঁহারা দুঃখিত হইলেন, এবং একে একে তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন, 20 সে কি আমি? তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, এই বারো জনের মধ্যে একজন, যে আমার সঙ্গে ভোজনপাত্রে হাত ডুবাইতেছে, সেই। 21 কেননা মনুষ্যপুত্রের বিষয়ে যেমন লিখিত আছে, তেমনি তিনি যাইতেছেন; কিন্তু ধিক্ সেই ব্যক্তিকে, যাহার দ্বারা মনুষ্যপুত্র সমর্পিত হন। সেই মনুষ্যের জন্ম না হইলে তাহার পক্ষে ভালই ছিল।
22 তাঁহারা ভোজন করিতেছেন, এমন সময়ে তিনি রুটি লইয়া আশীর্বাদপূর্বক ভাঙ্গিলেন এবং তাঁহাদিগকে দিলেন, আর কহিলেন, তোমরা লও, ইহা আমার শরীর। 23 পরে তিনি পানপাত্র লইয়া ধন্যবাদপূর্বক তাঁহাদিগকে দিলেন, এবং তাঁহারা সকলেই তাহা হইতে পান করিলেন। 24 আর তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, ইহা আমার রক্ত, নূতন নিয়মের রক্ত, যাহা অনেকের জন্য পাতিত হয়। #১৪:২৪ ক*(বা) পাতিত হইতেছে। 25 আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যে দিন আমি ঈশ্বরের রাজ্যে ইহা নূতন ভাবে পান করিব, সেই দিন পর্যন্ত আমি দ্রাক্ষাফলের রস আর কখনও পান করিব না।
26 পরে তাঁহারা গীত গান করিয়া বাহির হইয়া জৈতুন পর্বতে গেলেন। 27 তখন যীশু তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমরা সকলে বিঘ্ন পাইবে; কেননা লেখা আছে, “আমি পালরক্ষককে আঘাত করিব, তাহাতে মেষেরা ছিন্নভিন্ন হইয়া পড়িবে।” #সখ ১৩:৭ 28 কিন্তু উঠিলে পর আমি তোমাদের অগ্রে গালীলে যাইব। 29 পিতর তাঁহাকে কহিলেন, যদিও সকলে বিঘ্ন পায়, তথাপি আমি পাইব না। 30 যীশু তাঁহাকে কহিলেন, আমি তোমাকে সত্য কহিতেছি, তুমিই আজ, এই রাত্রিতে, মোরগ দুই বার ডাকিবার পূর্বে, তিন বার আমাকে অস্বীকার করিবে। 31 কিন্তু তিনি অতিশয় ব্যগ্রতা সহকারে বলিতে লাগিলেন, যদি আপনার সহিত মরিতেও হয়, কোন মতে আপনাকে অস্বীকার করিব না। অন্য সকলেও তদ্রূপ কহিলেন।
গেৎশিমানী বাগানে যীশুর মর্মান্তিক দুঃখ
32 পরে তাঁহারা গেৎশিমানী নামক এক স্থানে আসিলেন; আর তিনি আপন শিষ্যদিগকে কহিলেন, আমি যতক্ষণ প্রার্থনা করি, তোমরা এখানে বসিয়া থাক। 33 পরে তিনি পিতর, যাকোব ও যোহনকে সঙ্গে লইয়া গেলেন, এবং অত্যন্ত বিস্ময়াপন্ন ও উৎকন্ঠিত হইতে লাগিলেন। 34 তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, আমার প্রাণ মরণ পর্যন্ত দুঃখার্ত হইয়াছে; তোমরা এখানে থাক, আর জাগিয়া থাক। 35 পরে তিনি কিঞ্চিৎ অগ্রে গিয়া ভূমিতে পড়িলেন, এবং এই প্রার্থনা করিলেন, যদি হইতে পারে, তবে যেন সেই সময় তাঁহার নিকট হইতে চলিয়া যায়। 36 তিনি কহিলেন, আব্বা, পিতঃ, সকলই তোমার সাধ্য; আমার নিকট হইতে এই পানপাত্র দূর কর; তথাপি আমার ইচ্ছামত না হউক, তোমার ইচ্ছামত হউক। 37 পরে তিনি আসিয়া দেখিলেন, তাঁহারা ঘুমাইয়া পড়িয়াছেন, আর তিনি পিতরকে কহিলেন, শিমোন, তুমি কি ঘুমাইয়া পড়িয়াছ? এক ঘণ্টাও কি জাগিয়া থাকিতে তোমার শক্তি হইল না? 38 তোমরা জাগিয়া থাক ও প্রার্থনা কর, যেন পরীক্ষায় না পড়; আত্মা ইচ্ছুক বটে, কিন্তু মাংস দুর্বল। 39 আর তিনি পুনরায় গিয়া সেই কথা বলিয়া প্রার্থনা করিলেন। 40 পরে তিনি আবার আসিয়া দেখিলেন, তাঁহারা ঘুমাইয়া পড়িয়াছেন; কারণ তাঁহাদের চক্ষু বড়ই ভারী হইয়া পড়িয়াছিল, আর তাঁহাকে কি উত্তর দিবেন, তাহা তাঁহারা বুঝিতে পারিলেন না। 41 পরে তিনি তৃতীয়বার আসিয়া তাঁহাদিগকে কহিলেন, এখন তোমরা নিদ্রা যাও, বিশ্রাম কর; যথেষ্ট হইয়াছে; সময় উপস্থিত, দেখ, মনুষ্যপুত্র পাপীদের হস্তে সমর্পিত হন। 42 উঠ, আমরা যাই; এই দেখ, যে ব্যক্তি আমাকে সমর্পণ করিতেছে, সে নিকটে আসিয়াছে।
যীশু শত্রুদের হস্তে সমর্পিত হন
43 আর তিনি যখন কথা কহিতেছেন, তৎক্ষণাৎ যিহূদা, সেই বারো জনের একজন, আসিল, এবং তাহার সঙ্গে অনেক লোক খড়্গ ও যষ্টি লইয়া প্রধান যাজকদের, অধ্যাপকগণের ও প্রাচীনবর্গের নিকট হইতে আসিল। 44 যে তাঁহাকে সমর্পণ করিতেছিল, সে পূর্বে তাহাদিগকে এই সঙ্কেত বলিয়াছিল, আমি যাহাকে চুম্বন করিব, সেই ঐ ব্যক্তি, তোমরা তাহাকে ধরিয়া সাবধানে লইয়া যাইবে। 45 সে আসিয়া তৎক্ষণাৎ তাঁহার নিকটে গিয়া বলিল, রব্বি; আর তাঁহাকে আগ্রহপূর্বক চুম্বন করিল। 46 তখন তাহারা তাঁহার উপরে হস্তক্ষেপ করিয়া তাঁহাকে ধরিল। 47 কিন্তু যাহারা পার্শ্বে দাঁড়াইয়াছিল, তাহাদের মধ্যে একজন আপন খড়্গ খুলিয়া মহাযাজকের দাসকে আঘাত করিল, তাহার একটি কান কাটিয়া ফেলিল। 48 তখন যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, যেমন দস্যু ধরিতে যায়, তেমনি কি তোমরা খড়্গ ও যষ্টি লইয়া আমাকে ধরিতে আসিলে? 49 আমি প্রতিদিন ধর্মধামে তোমাদের নিকটে থাকিয়া উপদেশ দিয়াছি, তখন ত আমায় ধরিলে না; কিন্তু শাস্ত্রের বচনগুলি সফল হওয়া আবশ্যক। 50 তখন শিষ্যেরা সকলে তাঁহাকে ছাড়িয়া পলাইয়া গেলেন।
51 আর, একজন যুবক উলঙ্গ শরীরে একখানি চাদর জড়াইয়া তাঁহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিতে লাগিল; 52 তাহারা তাহাকে ধরিল, কিন্তু সে সেই চাদরখানি ফেলিয়া উলঙ্গই পলায়ন করিল।
মহাযাজকের সম্মুখে যীশুর বিচার
53 পরে তাহারা যীশুকে মহাযাজকের নিকটে লইয়া গেল; তাঁহার সঙ্গে প্রধান যাজকগণ, প্রাচীনবর্গ ও অধ্যাপকেরা সকলে সমবেত হইল। 54 আর পিতর দূরে থাকিয়া তাঁহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ ভিতরে, মহাযাজকের প্রাঙ্গণ পর্যন্ত গেলেন, এবং পদাতিকদের সহিত বসিয়া আগুন পোহাইতে লাগিলেন।
55 তখন প্রধান যাজকগণ ও সমস্ত মহাসভা যীশুকে বধ করিবার জন্য তাঁহার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য অন্বেষণ করিল, কিন্তু পাইল না। 56 কেননা অনেকে তাঁহার বিরুদ্ধে মিথ্যাসাক্ষ্য দিল বটে, কিন্তু তাহাদের সাক্ষ্য মিলিল না। 57 পরে কয়েক জন দাঁড়াইয়া তাঁহার বিপক্ষে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়া কহিল, 58 আমরা উহাকে এই কথা বলিতে শুনিয়াছি, আমি এই হস্তকৃত মন্দির ভাঙ্গিয়া ফেলিব, আর তিন দিনের মধ্যে অহস্তকৃত আর এক মন্দির নির্মাণ করিব। 59 ইহাতেও তাহাদের সাক্ষ্য মিলিল না। 60 তখন মহাযাজক মধ্যস্থানে দাঁড়াইয়া যীশুকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি কিছুই উত্তর দিবে না? তোমার বিরুদ্ধে ইহারা কি সাক্ষ্য দিতেছে? 61 কিন্তু তিনি নীরব রহিলেন, কোন উত্তর দিলেন না। আবার মহাযাজক তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি সেই খ্রীষ্ট, পরমধন্যের পুত্র? 62 যীশু কহিলেন, আমি সেই; আর তোমরা মনুষ্যপুত্রকে পরাক্রমের দক্ষিণ পার্শ্বে বসিয়া থাকিতে ও আকাশের মেঘসহ আসিতে দেখিবে। #দানি ৭:১৩ 63 তখন মহাযাজক আপন বস্ত্র ছিঁড়িয়া কহিলেন, আর সাক্ষীতে আমাদের কি প্রয়োজন? 64 তোমরা ত ঈশ্বর-নিন্দা শুনিলে; তোমাদের কি বিবেচনা হয়? তাহারা সকলে তাঁহাকে দোষী করিয়া বলিল, এ মরিবার যোগ্য। 65 তখন কেহ কেহ তাঁহার গায়ে থুথু দিতে লাগিল, এবং তাঁহার মুখ ঢাকিয়া তাঁহাকে ঘুষি মারিতে লাগিল, আর বলিতে লাগিল, ভাববাণী বল না? পরে পদাতিকগণ প্রহার করিতে করিতে তাঁহাকে গ্রহণ করিল।
পিতর যীশুকে তিন বার অস্বীকার করেন
66 পিতর যখন নিচে প্রাঙ্গণে ছিলেন, তখন মহাযাজকের এক দাসী আসিল; 67 সে পিতরকে আগুন পোহাইতে দেখিয়া তাঁহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া কহিল, তুমিও ত সেই নাসারতীয়ের, সেই যীশুর, সঙ্গে ছিলে। 68 কিন্তু তিনি অস্বীকার করিয়া কহিলেন, তুমি যাহা বলিতেছ, তাহা আমি জানিও না, বুঝিও না। পরে তিনি বাহির হইয়া ফটকের নিকটে গেলেন, আর মোরগ ডাকিয়া উঠিল। 69 কিন্তু দাসী তাঁহাকে দেখিয়া, যাহারা নিকটে দাঁড়াইয়াছিল, তাহাদিগকেও বলিতে লাগিল, এই ব্যক্তি তাহাদের একজন। 70 তিনি আবার অস্বীকার করিলেন। কিঞ্চিৎ কাল পরে, যাহারা নিকটে দাঁড়াইয়াছিল, আবার তাহারা পিতরকে বলিল, সত্যই তুমি তাহাদের একজন, কেননা তুমি গালীলীয় লোক। 71 কিন্তু তিনি অভিশাপপূর্বক শপথ করিয়া বলিতে লাগিলেন, তোমরা যে ব্যক্তির কথা বলিতেছ, তাহাকে আমি চিনি না। 72 তৎক্ষণাৎ দ্বিতীয় বার মোরগ ডাকিয়া উঠিল; তাহাতে যীশু এই যে কথা বলিয়াছিলেন, ‘মোরগ দুই বার ডাকিবার পূর্বে তুমি তিন বার আমাকে অস্বীকার করিবে,’ তাহা পিতরের মনে পড়িল; এবং তিনি সেই বিষয় চিন্তা করিয়া ক্রন্দন করিতে লাগিলেন।
Currently Selected:
মার্ক ১৪: বিবিএস
Highlight
Share
Copy
Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Copyright © 2023 Bangladesh Bible Society. All rights reserved.